নিউজ ডেস্ক: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) এর ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা মোঃ রিফাত হোসেন রাফিকে গতবছর পরীক্ষার হলে মোবাইল নিয়ে অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি জুলাই-আগস্ট এর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মানবিক দিক বিবেচনায় তার শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সালের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২২-২০২৩ সেশনের ২০২৩ সালের ১ম বর্ষ ১ম সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা (মানোন্নয়ন) পিএইচওয়াই ১১০১ বিষয়ের পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে রাফির সংশ্লিষ্ট সেমিস্টারের সব পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করা হয়। একইসঙ্গে তাকে পরবর্তী ব্যাচের সঙ্গে পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
তবে, রাফি বিশেষ বিবেচনায় শাস্তি মওকুফের জন্য আবেদন করলে শৃঙ্খলা বোর্ড বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করে। জুলাই, আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলনে অংশগ্রহণ করার প্রেক্ষাপটে এবং মানবিক দিক থেকে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তার শাস্তি মওকুফ করা হয়। ফলে তাকে পূর্বের সেমিস্টারের পরীক্ষা সম্পন্ন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই মওকুফ শুধুমাত্র একবারের জন্য প্রযোজ্য। এছাড়া, তাকে দ্রুত বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রদল নেতা রিফাত হোসেনের শাস্তি মওকুফের বিষয়টি জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন বলেন, ১ বছর পূর্বে পরীক্ষায় মোবাইল নিয়ে অসদুপায় অবলম্বনের কারণে বহিষ্কার হয়েছে, এখন জুলাই অভ্যুত্থানের দোহাই এবং দলীয় প্রভাব দেখিয়ে মওকুফ পাওয়া ও পূণরায় পরিক্ষা নেয়ার বিষয়টি জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খার সাথে প্রতারণার শামিল।
এ বিষয়ে ছাত্রদল নেতা রিফাত হোসেন রাফি বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন সময় আমার কাছে মোবাইল পাওয়ায় তৎকালীন সময় আওয়ামী লীগের দোসরা আমাকে বহিষ্কার করেছে। আমি ছাত্রদল করায় আমার উপরে আরো বেশি চওড়া হয়েছে। সেজন্য আমি শৃঙ্খলা বোর্ডে আবেদন করি। আমার সাথে অন্যায় হয়েছে সেটি আমি উল্লেখ করি।
জুলাই আগস্ট বিবেচনায় শাস্তি মওকুফ এর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, আমি আহত শিক্ষার্থী হিসেবে আবেদন করেছি। সে হিসেবে তারা বিবেচনা করেছে।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য ড. মো.ফেরদৌস রহমান বলেন, বিষয়টি এখনো ফাইনাল নয়। শৃঙ্খলা বোর্ড শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্ত নিলেও এইটি একাডেমিক কাউন্সিল এবং সিন্ডিকেট অনুমোদন পেলে তারপর সে পরীক্ষায় বসতে পারবে।
এক বছর পূর্বে বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থী কিভাবে জুলাই আগস্ট বিবেচনায় শৃঙ্খলা বোর্ড শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্ত নেয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, সে জুলাই বিপ্লবের আহত শিক্ষার্থী সে হিসেবে এটি বিবেচনা করা হয়েছে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো.তানজিউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয়। এখনো একাডেমি কাউন্সিল এবং সিন্ডিকেটের অনুমোদন বাকি আছে। আর চিঠিতে ভাষাগত কিছু ভুল রয়েছে রবিবার সেটি ঠিক করে পুনরায় দেওয়া হবে।
Leave a Reply