হুসাইন আল হিমেল, উপজেলা প্রতিনিধি,ডিমলা
নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলায় নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও পরিবহনের দায়ে সাহল বিন স্বচ্ছ নামে এক বালু ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আখতার।
উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের শৈল্যারঘাট ব্রিজ সংলগ্ন সিংগাহারা নদীর তীরে দীর্ঘদিন ধরেই একটি গোষ্ঠী গোপনে বালু উত্তোলন করে আসছিল। এই এলাকাটি ডিমলা ফরেস্টের পাশে অবস্থিত হওয়ায় পরিবেশগত দিক থেকেও অত্যন্ত সংবেদনশীল। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নদীর পাড় কেটে, নদীর প্রবাহে ব্যাঘাত ঘটিয়ে ট্রাক্টরের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় বালু সরবরাহ করা হচ্ছিল। এ সংক্রান্ত গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেলে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
অভিযানকালে সাহল বিন স্বচ্ছ নামে এক বালু ব্যবসায়ীকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ১৫ ধারা অনুযায়ী তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযান চলাকালে পুলিশ সদস্যরাও প্রশাসনকে সহায়তা করেন।
অভিযান বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আখতার বলেন,
“নদী রক্ষা এবং পরিবেশের সুরক্ষায় আমরা নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করছি। কেউ আইনের বাইরে গিয়ে নদী ও পরিবেশের ক্ষতি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজকের অভিযানে আইন অমান্যকারীকে হাতেনাতে ধরে জরিমানা আদায় করা হয়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ রাসেল মিয়া বলেন,
“পরিবেশ রক্ষায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছে। এ ধরনের কার্যক্রম শুধু নদীর গতিপথ নষ্ট করে না, এতে কৃষিজমি ধ্বংস হয়, নদীভাঙন বৃদ্ধি পায় এবং জীববৈচিত্র্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে। আমরা এ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রাখব।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শৈল্যারঘাট এলাকায় নদী থেকে বালু তোলার ফলে তীরে ফাটল দেখা দিচ্ছে, কৃষিজমির ক্ষতি হচ্ছে এবং নদীর নাব্যতা দিনদিন কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
এই অভিযান ডিমলায় প্রশাসনের সক্রিয় উপস্থিতি ও আইনের প্রয়োগের একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত। নদী ও পরিবেশ রক্ষায় এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে অবৈধ বালু ব্যবসার লাগাম টানা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
Leave a Reply