নিশান খান
জাবি প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গ্রীষ্মের তাপদাহেও ফুটে উঠেছে রঙের উল্লাস; কৃষ্ণচূড়া, জারুল, আর কাঠগোলাপে মোড়া সাতশ একরের এক নান্দনিক চিত্রপট। জাবি যেন এই গ্রীষ্মকেও পরিণত করেছে এক সৃষ্টিশীল সৌন্দর্যের উৎসবে। এখানে গ্রীষ্মের অর্থ শুধু গরম নয়—এটা এক রঙিন অনুভব, প্রকৃতির চিত্রপটে নীরব কবিতার মতো আঁকা অনবদ্য নান্দনিকতা।
ঋতুরাজ বসন্ত বিদায় নিয়েছে ঠিকই, তবে তার রেখে যাওয়া রঙের আঁচড় গ্রীষ্মে রূপ নিয়েছে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম রাজত্বে। সাতশ একরের এ ক্যাম্পাস যেন রূপ নিয়েছে এক বিশাল ক্যানভাসে, যেখানে প্রকৃতি নিজ হাতে এঁকেছে আগুনঝরা রঙের গল্প।
চারপাশে জারুলের বেগুনি, কাঠগোলাপের শুভ্রতা, সোনালুর ঝুলন্ত সোনালি ফুল আর কৃষ্ণচূড়ার উজ্জ্বল লাল ছড়িয়ে পড়েছে ক্যাম্পাসজুড়ে। ছাত্রী হলরোড, চৌরঙ্গী, শিক্ষক ক্লাব, মুন্নী চত্বর, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে—সবখানেই ফুটে উঠেছে এক স্বপ্নময় দৃশ্যপট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিনিকেতন, সুইজারল্যান্ড ও পুকুরপাড়গুলোতে জারুল ফুলের ছায়ায় রচিত হচ্ছে এক কাব্যিক আবহ। রাস্তার ধারে ঝরে-পড়া ফুলের পাপড়িতে মনে হয়, প্রকৃতি যেন বিছিয়ে দিয়েছে এক ফুলেল গালিচা।
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু শুভ বলেন,
“গ্রীষ্ম এলেই জাবির প্রকৃতি এক নতুন রূপে ধরা দেয়। এই নৈসর্গিক সৌন্দর্য আমাকে বারবার মুগ্ধ করে। ঋতুর পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্পাসের প্রকৃতিও যেন নতুন সাজে সেজে ওঠে—যা বারবার বাংলাদেশের ষড়ঋতুর ঐশ্বর্যকে মনে করিয়ে দেয়। চারপাশে জারুল, কৃষ্ণচূড়া আর কাঠগোলাপের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য পথচলার ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়। আর বিকেলের রোদ যখন লেকের শান্ত জলে সোনালি আভা ছড়িয়ে দেয়, তখন মনে হয় প্রকৃতি যেন নিঃশব্দে এক অনুপম কাব্য রচনা করছে আমাদের জন্য।”
এই ক্যাম্পাসে গ্রীষ্মের রোদ শুধু পোড়ায় না, বরং রাঙিয়ে তোলে প্রকৃতির ক্যানভাস। প্রতিটি গাছের ডালে, প্রতিটি ফুলের পাপড়িতে, প্রতিটি হাওয়ার দোলায় যেন লুকিয়ে আছে সৌন্দর্যের নীরব আহ্বান।
জাবি শুধু জ্ঞানের আলো ছড়ায় না, প্রকৃতির সৌন্দর্যেও গ্রীষ্মকে করে তোলে হৃদয়গ্রাহী।
Leave a Reply