আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা দিন দিন বাড়ছে। সম্ভাব্য সংঘাতের আশঙ্কায় পাকিস্তানে চলছে যুদ্ধ প্রস্তুতি। দেশের বিভিন্ন স্থানে সামরিক মহড়া করেছে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী। আজাদ কাশ্মীরের নাগরিকদের খাদ্য মজুতের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সীমান্তবর্তী অঞ্চলের প্রশাসকরা আপদকালীন অর্থ সংগ্রহ করছেন।
এবার পাকিস্তানের যুদ্ধ প্রস্তুতির অংশ হলেন বেসামরিক নারীরা। তাদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
সপ্তাহের শুরু থেকেই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে হতাহতদের উদ্ধারে নারীদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথমবারের মতো নারীদের এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
রাওয়ালপিন্ডি জেলা প্রশাসন এবং সিভিল ডিফেন্স বিভাগ অপ্রত্যাশিত জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ব্যবস্থাপনা চূড়ান্ত করেছে। শহরজুড়ে স্থাপিত ১৬টি জরুরি সাইরেন সম্পূর্ণরূপে সক্রিয় ও আপডেট করা হয়েছে। এসবের মধ্যে সিভিল ডিফেন্স অফিসের কেন্দ্রীয় পাইলট সাইরেন অন্তর্ভুক্ত।
এছাড়া, ৩৮টি উদ্ধার ও পর্যবেক্ষণ চেকপয়েন্ট এখন ২৪ ঘণ্টা কার্যকর রয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি পোস্ট সিভিল ডিফেন্স বিভাগ এবং ১৪টি রেসকিউ ১১২২ দ্বারা পরিচালিত। সবগুলোতে সপ্তাহের ৭ দিন কর্মী নিয়োজিত থাকবে।
সিভিল ডিফেন্স তার ৩,৫০০ স্বেচ্ছাসেবক এবং আগ্রহী যুবকদের জন্য আনুষ্ঠানিক ‘যুদ্ধাকালীন উদ্ধার’ প্রশিক্ষণ শুরু করেছে। প্রশিক্ষণ রাওয়ালপিন্ডি ক্যান্টমেন্ট পুলিশ স্টেশন, রাজা বাজারের মিশন হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল এবং সিভিল ডিফেন্স প্রধান কার্যালয়ে চলছে। ডেনিস হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে আরেকটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চালু হবে বলে জানা গেছে।
প্রথমবারের মতো নারী স্বেচ্ছাসেবকরাও ‘যুদ্ধকালীন উদ্ধার’ প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। সিভিল ডিফেন্স প্রধান কার্যালয়ে তাদের আহতদের উদ্ধার, জ্বলন্ত বা ধসে পড়া ভবন থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া এবং আগুন নেভানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ প্রতিদিন চলছে।
সূত্র জানায়, শহরের প্রধান সাইরেন পয়েন্টগুলো—কোহিনূর মিলস, রেলওয়ে লোকো শেড, জেনারেল বাস স্ট্যান্ড পীরওয়াধাই, ভিকার-উন-নিসা পোস্টগ্র্যাজুয়েট কলেজ, ওয়ার্কশপ ৫০১ ও ৫০২, আদিয়ালা জেল, গাওয়ালমান্ডি, চোহার চৌক এবং রাট্টা আমরাল আপডেট, পরিষ্কার ও পুনঃসক্রিয় করা হয়েছে।
যেকোনো জরুরি বা পরীক্ষামূলক পরিস্থিতিতে প্রথমে কাচেরির সিভিল ডিফেন্স অফিসের কেন্দ্রীয় পাইলট সাইরেন বাজবে। তারপর সব এলাকার সাইরেন বাজবে। সাইরেন শুনেই চেকপয়েন্টের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের তাৎক্ষণিকভাবে নির্ধারিত পোস্টে রিপোর্ট করতে হবে।
জেলা সিভিল ডিফেন্স অফিসার তালিব হুসাইন দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে বলেন, শান্তি বা সংকট যাই হোক, বিভাগ সর্বদা সতর্ক রয়েছে। তিনি জানান, ডেপুটি কমিশনার হাসান ওয়াকার চিমার কঠোর তত্ত্বাবধানে সব স্বেচ্ছাসেবককে সংগঠিত করা হয়েছে এবং তারা যুদ্ধ উদ্ধার মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। সিনিয়র প্রশিক্ষক নাসির কায়ানি এবং সাদাফ জাহুর ব্যবহারিক সেশন পরিচালনা করছেন। আর হালিমা সাদিয়া নারী স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
হুসাইনের মতে, রাওয়ালপিন্ডিতে সিভিল ডিফেন্সের প্রস্তুতি সম্পন্ন। অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার সরঞ্জাম সক্রিয় করা হয়েছে। কর্মীদের সব ধরনের ছুটি বাতিল এবং ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালনের নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
Leave a Reply