নিউজ ডেস্ক :
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মিটফোর্ড)। ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ও হরমোন বিভাগের সামনে যেতেই দেখা গেল, জমে রয়েছে ময়লা ও আবর্জনা। মশার প্রজননের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ। রোগীদের এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে, মশার উপদ্রবও ভোগাচ্ছে তাদের। এর সঙ্গে পুরো হাসপাতালে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন আর দালালদের দৌরাত্ম্য। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে মিটফোর্ড পরিদর্শন করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
হাসপাতালের আশপাশ ঘুরে দেখা গেছে, চারপাশের নালাগুলো বেশ অস্বাস্থ্যকর। গন্ধে হাসপাতালে আসা রোগীরা বিরক্ত। সেই সঙ্গে রয়েছে ডেঙ্গুর ভয়। রোগীর স্বজনরা বলছেন, বৃষ্টির সময় নালার বেহাল অবস্থা বেশি দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া হাসপাতালের বাইরের এলাকা নিয়মিত পরিষ্কার না করায় সেখানেও ময়লা-আবর্জনা জমে থাকে; যা প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
শুরুতে শয্যা সংখ্যা ছিল ৬০০, পরে তা ৯০০ এবং এখন ১ হাজার ২০০-তে পৌঁছেছে। যদি প্রতিটি রোগীর সঙ্গে একজন করে অতিথি যোগ করা হয়; তাহলে সে সংখ্যা দাঁড়ায় ২ হাজার ৪০০। কিন্তু সে তুলনায় হাসপাতালের পরিধি বাড়ানো যায়নি। ফলে রোগীর চাপ বেড়েছে।
গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের সামনে দেখা গেল, পাইপ ভেঙে ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি ছড়িয়ে পড়ছে। এতে আশপাশের পরিবেশ আরও নোংরা হচ্ছে। রোগী ও তাদের স্বজনরা নাক চেপে চলাফেরা করছেন।
হাসপাতালের এমন পরিবেশের কথা স্বীকার করেছেন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাজহারুল ইসলাম খানও। তিনি বলেন, হাসপাতালে শুরুতে শয্যা সংখ্যা ছিল ৬০০, পরে তা ৯০০ এবং এখন ১ হাজার ২০০-তে পৌঁছেছে। যদি প্রতিটি রোগীর সঙ্গে একজন করে অতিথি যোগ করা হয়; তাহলে সে সংখ্যা দাঁড়ায় ২ হাজার ৪০০। কিন্তু সে তুলনায় হাসপাতালের পরিধি বাড়ানো যায়নি। ফলে রোগীর চাপ বেড়েছে। অতিরিক্ত রোগীর কারণে হাসপাতালের পরিবেশ দিন দিন খারাপ হচ্ছে।
রোগীরা অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবহার করছে জানিয়ে তিনি বলেন, নালার অবস্থা খুবই নোংরা। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এগুলো পাঁচবার পরিষ্কার করা হয়েছে। তারপরও সামলানো যাচ্ছে না। ধারণ ক্ষমতার বাইরে রোগী আসার কারণে পরিবেশ ভালো রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
এসব সমস্যার সাময়িক সমাধানে নতুন উদ্যোগের কথা জানিয়ে মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, বাইরে চারটি অস্থায়ী টয়লেট তৈরি করা হয়েছে। যদিও রোগীরা সেগুলো ব্যবহার করছেন না। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, এখানে রোগীর চাপ অতিরিক্ত।
হাসপাতালে দালালদের দৌড়াত্ম্যের কথা বলতেই পরিচালক মাজহারুল ইসলাম খান বলেন, সরকারি বিধি-নিষেধের মধ্যে থেকেই আমাদের সব কার্যক্রম চালাতে হয়। তারপরও এখানে বিভিন্ন সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য দেখা যায়। প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে অনেকে এসব সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা এ কাজে সবচেয়ে বেশি সম্পৃক্ত।
তিনি বলেন, ‘আমরা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনাকে তিনটি মূলনীতি— শৃঙ্খলা, সততা ও জবাবদিহিতার ওপর ভিত্তি করে সাজিয়েছি। এ নীতিগুলো অনুসরণ করেই আমাদের সব কার্যক্রম পরিচালিত হয়।’
Leave a Reply