পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি-
রংপুরের পীরগাছায় অবশেষে সেই ইটভাটা ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সোমবার (১৯ মে) দুপুরে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে ইটভাটাটি গুড়িয়ে দেওয়া হয়। উপজেলার বামন সর্দার গ্রামে এমএসবি ব্রিকস ইটভাটার ধোঁয়ায় ৭৮ জন কৃষকের ৪১ একর জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। এ নিয়ে কৃষকদের আন্দোলনের ফলে ইটভাটা মালিক নামমাত্র কৃষকদের ক্ষতিপূরণের টাকা প্রদান করে। টাকা প্রদানের ১১ দিনের মাথায় ইটভাটাটি গুঁড়িয়ে দেয়া হলো।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, ওই ইটভাটাটির বিষাক্ত ধোঁয়ায় ৭৮ জন কৃষকের ৪১ একর জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। এ নিয়ে কৃষক আন্দোলন শুরু করে। পরে বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন সংবাদ প্রকাশ করে। নড়েচড়ে বসে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। সংবাদ প্রকাশের পর কৃষি অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে সরেজমিন তদন্তে ৭৮ জন কৃষকের ৪১ একর জমির ফসলের ক্ষতি নিরূপণ করে ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়। প্রথমে ভাটা মালিক মমিনুল ইসলাম ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হলেও পরে একাধিকবার উপজেলা পরিষদে কৃষকদের ডেকে টাকা না দিয়ে টালবাহানা করেন। এ ঘটনায় গত ৪ মে কৃষকরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিক্ষোভ করেন এবং ভাটা উচ্ছেদের দাবি জানান। এরপর ভাটা মালিক স্থানীয় বিএনপি নেতাদের দিয়ে পূনরায় নিজেদের মত করে ক্ষতির হার নিরুপন করে কৌশলে গত ৮ মে রাতে নামমাত্র ক্ষতিপূরণ নিতে বাধ্য করে।
যেখানে কৃষি বিভাগের পূর্ব নির্ধারিত অঙ্কের চেয়ে প্রায় ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা কম প্রদান করা হয়। এ সময় অনেক কৃষক অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে ভাটা উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছিলেন।
অবশেষে গতকাল সোমবার দুপুরে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে নির্দেশনার পর ইটভাটাটির এক পাশের ওয়াল এবং ধোঁয়া নির্গত চিমনি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কৃষকরা। অভিযানে নেতৃত্ব দেন রংপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তমাল আজাদ। এসময় রংপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুস সালাম সরকার, সহকারী কমল কুমার সরকার, জেলা প্রশাসনের পরিদর্শক মাসুদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply