পীরগাছা(রংপুর) প্রতিনিধি –
চোঁখের সামনে বিনা চিকিৎসায় ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ছেলে, মা হয়ে এ দৃশ্য দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারছেন না। ছেলের এই করুণ অবস্থা কোন ভাবেই মেনেই নিতে পারছেন না এক হতভাগী মা। তাই অশ্রুসিক্ত নয়নে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছেন, তার আগে যেন তার ছেলের মৃত্যু না হয়।
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার তালুক ইসাদ (নয়াটারী) গ্রামের বৃদ্ধা ছমিরন বেগম তার ছেলে ইটভাটা শ্রমিক শহিদুল ইসলামকে বাঁচাতে সাহায্যে কামনা করে এই আকুতি করছেন।
একসময় ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন শহিদুল ইসলাম (৪২)। যা উপার্জন করতে তা দিয়ে বেশ ভালোই চলছিল তার সংসার। কিন্তু দুই বছর আগে কাজের সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি করলে পরীক্ষায় ধরা পড়ে, তার পেটের নাড়ি-ভুড়ি উল্টে গেছে। জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করা হলেও সুস্থ হতে পারেননি তিনি। বরং অপারেশনের পর থেকে শুরু হয় নানা জটিলতা। শুরু হয় জীবনযুদ্ধের নতুন এক অধ্যায়- বেঁচে থাকার লড়াই।
চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে গৃহপালিত গরু-ছাগলসহ বিক্রি করে দিয়েছেন একমাত্র সম্বল ৬ শতক ভিটেমাটিও। এখন টাকা নেই, তাই চিকিৎসাও বন্ধ। ফলে দিন দিন শহিদুলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। সর্বশেষ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার পেটে ক্যান্সার ধরা পড়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হবে তাকে, যেখানে প্রয়োজন ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা। কিন্তু এত টাকা যোগাড়ের কোনো উপায় নেই শহিদুলের পরিবারের। ফলে মৃত্যুর কাছে যেন অসহায় আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন তিনি।
শহিদুল ইসলামের ব্যক্তিগত জীবনে এক স্ত্রী ও চার সন্তানের পিতা। কিভাবে স্বামীর চিকিৎসা করাবেন, কিভাবে চলবে সংসার, এই চিন্তায় দিশেহারা শহিদুলের স্ত্রী রহিমা বেগম। তার মধ্যেই আবার দুই মাস ধরে বাড়িতে এসে আছেন তার বিবাহিত এক মেয়ে। যৌতুকের জন্য স্বামীর বাড়িতে ঠাই হচ্ছে না মেয়েটির।
শহিদুলের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, আমি ছোট থেকে অন্যের বাড়িতে ঝি এর কাজ করে খেতাম। বিয়ের পরও ঝিয়ের কাজ করি। আমার যা ছিন সব শেষ। বাড়িভিটাও বিক্রি করে স্বামীর চিকিৎসা করেছি। নিজেও তেমন কাজ করতে পারি না। ঢাকায় নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার সামর্থ্যও নেই। একদম নিরুপায়। স্বামীর জীবন বাঁচাতে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
শহিদুলের মা বৃদ্ধা ছমিরন বেগম চোখের সামনে ছেলের এই করুণ অবস্থা যেন মেনেই নিতে পারছেন না। অশ্রুসিক্ত নয়নে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানান, তার আগে যেন তার ছেলের মৃত্যু না হয়।
অসুস্থ শহিদুল ইসলাম বুক ভরা আশা নিয়ে আকুতি জানান, তিনি বাঁচতে চান। তিনি আবার সংসারের হাল ধরতে চান। তাই তিনি
সকলের সাহায্য কামনা করছেন।
শহিদুলের প্রতিবেশীরা জানান, তারা শহিদুলের জন্য সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। তাকে বাঁচাতে অনেক টাকার প্রয়োজন। দেশে ও বিদেশে সকল হৃদয়বান মানুষের কাছে তার চিকিৎসায় সাহায্য প্রার্থনা করেছেন তার প্রতিবেশীরা।
গ্রামবাসীর চাওয়া, একটা সময় সংসারের জন্য যে মানুষটি দিন-রাত খেটে গেছেন, সেই শহিদুল আজ মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে জীবন ভিক্ষা চাইছেন। একটি প্রাণ বাঁচানোর এই লড়াইয়ে আমরা কি তার পাশে দাঁড়াতে পারি না?
সাহায্য পাঠানোর (বিকাশ/নগদ) মোবাইল নং- 01784774560।
Leave a Reply