সরকারি চাকরির নিয়ম ভেঙে দীর্ঘদিন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ সত্ত্বেও কুড়িগ্রামে স্বাস্থ্য সহকারীদের সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন আব্দুল ওহাব শাহ। বিষয়টি ঘিরে জেলাজুড়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন উলিপুর উপজেলার আব্দুল ওহাব শাহ। তবে তার এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে একজন দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ব্যক্তি সরকারি চাকরিতে থেকে একটি পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃত্বে আসেন?
অভিযোগ রয়েছে, আব্দুল ওহাব গত ১৬ বছর ধরে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাকে একাধিকবার দলীয় মিছিল, প্রচারণা এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে দেখা গেছে—বিশেষ করে উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু ও পৌরসভা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাঈদ সরকারের নির্বাচনী প্রচারণায় তাকে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে।
সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সক্রিয় রাজনৈতিক অংশগ্রহণ আইনত নিষিদ্ধ।
বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয় যখন গত ২৫ মে ঢাকায় হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে আয়োজিত ছয় দফা দাবির একটি আন্দোলনে ওহাব শাহকে বক্তৃতা দিতে দেখা যায়। সেখানে তার বক্তব্য দেওয়ার বিষয়টি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় বিতর্কের।
এর ফলে প্রশ্ন উঠেছে—এটি কি পেশাজীবী সংগঠনের স্বতন্ত্র আন্দোলন, নাকি কোনো রাজনৈতিক দলের প্রচ্ছন্ন কর্মসূচি?
স্থানীয়দের অভিযোগ, হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন একটি নিরপেক্ষ পেশাজীবী সংগঠন হিসেবে পরিচিত হলেও রাজনৈতিক প্রভাব এতে নেতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন কিংবা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টি তদন্ত করে দেখা এবং নিশ্চিত করা—পেশাদারিত্ব যেন রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকে এবং সরকারি কর্মচারীরা যেন তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখেন।
Leave a Reply