ইবি প্রতিনিধি:
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা রাজাকার এটিএম আজহারুলকে খালাস দেওয়া এবং রাবিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলার প্রতিবাদে মশাল মিছিল করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের নেতাকর্মীরা।
বুধবার (২৮ মে) রাত ৮ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড়ে সমবেত এই মশাল মিছিল শুরু করেন তারা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মী।
মশাল মিছিলে “জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো; বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ; ৫২’র শত্রু যারা, বাংলাদেশের শত্রু তারা; ৭১ এর শত্রু যারা, বাংলাদেশের শত্রু তারা; ৮৯ এর শত্রু যারা, বাংলাদেশের শত্রু তারা; ২৪ এর এর শত্রু যারা, বাংলাদেশের শত্রু তারা; রাবিতে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব দে; ঐক্যজোটে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব দে; ইন্টেরিম সরকার, রাজাকারের পাহারাদার; ইন্টেরিম সরকার, আল বদরের পাহারাদার; রাজাকারের আস্তানা, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও; মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, রাজাকারের ঠাই নাই; মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, আল বদরের ঠাই নাই সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন নেতাকর্মীরা
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তারা বলেন, “বাংলাদেশের আপিল বিভাগ থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত রাজাকার এটিএম আজহারকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। আমরা এই রায় ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। তাদের ই বেকসুর খালাস দেওয়া হয় যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আলবদরের ভুমিকায় তৎকালীন ছাত্র সংঘের রংপুর বিভাগের সভাপতি এটিএম আজহার সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। সে কোনভাবেই নিরপরাধ একজন ব্যক্তি নয়, সে একজন চিহ্নিত আল বদর।”
সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সমস্যা মোহাম্মদ হাম্মাদ তালুকদার বলেন, “আপনারা জানেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট মানবতাবিরোধী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে খালাস দিয়েছে আমরা এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমাদের বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল একাত্তরের মাধ্যমে কিন্তু যে ঘাতকরা একাত্তরের বিরোধিতা করছিল তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা বলে দিতে চাই কোন রাজাকারকে খালাস দেওয়া চলবে না চলবে না। আমরা ২৪ কে যেমন ধারণ করি তেমনি ২৪ এর চেয়ে বড় হচ্ছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। একাত্তরে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ এ দেশে স্বাধীনতা করার জন্য লড়েছিল কিন্তু একটা পক্ষ দেশের কথা চিন্তা না করে, দেশের মানুষের কথা চিন্তা না করে পাকিস্তানের পক্ষে অংশগ্রহণ করেছিল এবং এই অন্তবর্তী কালে সরকার তাদের খালাস দিচ্ছে। আমরা বলে দিতে চাই এই অন্তবর্তী সরকার ২৪শের রক্তের উপর দাঁড়িয়েছে সেই রক্তের উপর দাঁড়িয়ে ২৪ আর ৭১ আলাদা হতে পারেনা। গতকাল যখন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট এর বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল করে সেখানে পর্যন্ত হামলা চালানো হয়েছে। হামলা চালিয়েছে সেই একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে শিবির। আমরা বলে দিতে চাই দেশ শিবিরের না, দেশ সমগ্র মানুষের। দেশ শিবিরের কথায় চলবে না। আর যদি আমাদের একটা ভাইয়ের উপর হামলা চালানো হয় তাহলে সমগ্র দেশের মানুষ নিয়ে আমরা মাঠে নামবো এবং অন্তবর্তীকালীন সরকার যদি এর সুষ্ঠু তদন্ত না করে তাহলে আন্দোলনে নামতে আমরা বাধ্য হবো।”
উল্লেখ্য, গতকাল মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা রাজাকার এটিএম আজহারুলকে খালাস দেয়। এ নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শান্তিপূর্ণ মিছিল করেন সেখানে হামলা চালায় একটি গোষ্ঠী। তবে ছাত্রশিবির এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে।
Leave a Reply