(মোঃ রাহাদ আলী সরকার – মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি প্রতিনিধি)
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের যুগপূর্তি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘সিভাসু ফিশ ফেস্টিভ্যাল-২০২৫’।২৯ এপ্রিল শুরু হওয়া দুই দিন ব্যাপী এ মেলায় পোষ্টার প্রেজেন্টেশনে যৌথভাবে ‘বেস্ট পোস্টার অ্যাওয়ার্ড” পেয়েছে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির একদল শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ফিশারিস ডিপার্টমেন্টের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাহিদ কায়সার সাফি, সাবিহা চৌধুরী এবং ফারিয়া ইসলাম বাঁধন এর প্রস্তাবিত পোস্টার “ডেভলপমেন্ট অফ রেডি টু ইট, কেন্ড রুই, তেলাপিয়া এন্ড সার্ডিন” এ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে।
গতবছর নভেম্বরে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডঃ কাজী আহসান হাবীব ও লেকচারার মোঃ নাজমুস সাকিবের তত্ত্বাবধানে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা যৌথভাবে এই গবেষণার কাজটি করেন।
এই প্রথম বাংলাদেশে তিনটি মাছের সফলভাবে ক্যান প্রোডাক্ট ডেভলপ করা হয়েছে Aquatic Bio Resource (ABR) ল্যাবে। রুই, তেলাপিয়া এবং সার্ডিন (চাপিলা) মাছ গুলোর উৎপাদন দেশে অনেক বেশি, যার কারনে ক্যানিং প্রডাকশনে খরচ কম হবে। মাছগুলো সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা সম্ভব এবং বিদেশে রপ্তানি করে ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করাও সম্ভব। বাংলাদেশের নিজস্ব মাছের স্বাদের কথা বিবেচনা করে মাছগুলোর প্রক্রিয়াজাতকরণ বাংলাদেশের রেসিপি অনুযায়ী বিকশিত করা হয়েছে।
এ সম্পর্কে সাবিহা চৌধুরী জানান, “বাংলাদেশে রুই, তেলাপিয়া এবং চাপিলা (সার্ডিন) মাছ জনপ্রিয় এবং সহজলভ্য। এ কারণে, আমরা শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এবিআর ল্যাবে প্রফেসর ডঃ কাজী আহসান হাবীব স্যারের তত্ত্বাবধানে, আমাদের চতুর্থ বর্ষের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের আওতায় এই মাছগুলোর ক্যানিং নিয়ে গবেষণা শুরু করি। এর আগে, স্যার বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ইলিশ মাছের ক্যানিং করতে সফল হয়েছিলেন। সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায়, আমরাই দেশে প্রথম এই তিনটি মাছের ক্যান প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট শুরু করি। বর্তমানে, আমাদের তিন মাসের গবেষণার ডাটা ইতিবাচক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানদণ্ড অনুসারে গ্রহণযোগ্য।”
ক্যানের ‘সেল্ফ লাইফ’ এক বছর পর্যন্ত বাড়ানোর চেষ্টা চলছে জানিয়ে ফারিয়া ইসলাম বাঁধন জানান, “আমরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি।প্রতিটি মাছের জন্য নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ড অনুসরণ করে ক্যান প্রস্তুত করা হচ্ছে, যাতে গুণগত মান নিশ্চিত থাকে। গবেষণা সম্পন্ন হলে, প্রফেসর ডঃ কাজী আহসান হাবীব স্যার আমাদের তৈরি করা প্রোডাক্টগুলো ইন্ডাস্ট্রির হাতে তুলে দেবেন।”
দুই দিনব্যাপী ফিশ ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব এবং সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন সিভাসু’র উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন।
এসময় মেলায় দেশের ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৯৫টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয় এবং ৩৫০টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।
Leave a Reply