বাকৃবি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের তত্ত্বাবধানে সম্প্রতি বায়োইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি পোস্টার প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী কার্যক্রমে উৎসাহিত করা এবং তাদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা প্রকাশের সুযোগ করে দেওয়া।
মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ১১টায় কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অফিসের সামনে “বিআইই একাডেমিক পোস্টার প্রেজেন্টেশন” শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো জয়নাল আবেদীন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কম্পিউটার সাইন্স ও ম্যাথমেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ মোস্তাগীজ বিল্লাহ, অধ্যাপক ড. মেছবাহ উদ্দিন, অধ্যাপক ড. মো রাকিব হাসান, কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ বি এম আরিফ হাসান খান রবিন সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
প্রেজেন্টেশনে মোট ৪৬টি পোস্টার উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে একটি গবেষণা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক জার্নাল স্প্রিঞ্জার এ প্রকাশিত হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের গবেষণায় সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সম্ভাবনা তুলে ধরে।
এছাড়াও প্রেজেন্টেশনে অংশগ্রহণকারী সকলকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে এবং তিনজনকে বেস্ট পোস্টার প্রেজেন্টার হিসেবে পুরস্কৃত করা হবে বলে জানান আয়োজকরা।
বায়োইনফরমেটিক্স কোর্সের আওতায় শিক্ষার্থীরা বায়োলজিকাল ডেটা বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন প্রেডিকশন মডেল, সিমুলেশন, ডিএনএ সিকুয়েন্স বিশ্লেষণসহ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টে কাজ করছে। বাংলাদেশে কোর্সটি এখনো নতুন হলেও শিক্ষার্থীরা এর মাধ্যমে বাস্তব সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসছে।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. মেছবাহ উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাদের সেমিস্টারের প্রতিটি ল্যাব ও একাডেমিক কাজকে বাস্তবিক সমস্যা সমাধানের মডেলে রূপ দিয়েছে। কোনো কোনো সমস্যার জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার না থাকায় শিক্ষার্থীরাই তা তৈরি করেছে। আবার বিদ্যমান সফটওয়্যারে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের প্রয়াসও নিয়েছে তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই কাজগুলো গবেষণার প্রাথমিক হাতেখড়ি হিসেবে কাজ করবে। শিক্ষার্থীরা এ পোস্টারগুলো পরবর্তীতে মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য ব্যবহার করতে পারবে। এসব ছোট ছোট পদক্ষেপ ভবিষ্যতের বড় অর্জনের পথ তৈরি করবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আজকের এই পোস্টার প্রেজেন্টেশন আমাদের শিক্ষার্থীদের মেধা, উদ্ভাবনী শক্তি এবং গবেষণার প্রতি আগ্রহের একটি অনন্য প্রমাণ। বায়োইনফরমেটিক্স একটি নতুন ও সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র, যেখানে জীববৈজ্ঞানিক তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমরা কৃষি, চিকিৎসা ও পরিবেশ সংরক্ষণের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বাস্তবভিত্তিক সমাধান বের করতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আমাদের শিক্ষার্থীরা তাত্ত্বিক জ্ঞানকে বাস্তব প্রয়োগে রূপ দিচ্ছে। তারা যে উদ্যোগ, গবেষণা ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টে অংশ নিয়েছে, তা শুধু একাডেমিক অর্জন নয়, বরং বাংলাদেশের গবেষণা ও প্রযুক্তি খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের ইঙ্গিত। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই প্ল্যাটফর্ম শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় পথ দেখাবে এবং তারা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমাদের প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম হবে। আমি তাদের সাফল্য কামনা করি এবং এমন উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি।’
Leave a Reply