তা’মীরুল মিল্লাত প্রতিনিধি – হোসাইন
দেশের অন্যতম স্বনামধন্য ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার টঙ্গী ক্যাম্পাসে ক্রীড়া ও শরীরচর্চার চরম অপ্রতুলতা দেখা দিয়েছে। প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীর এই বৃহৎ শিক্ষালয়ে নেই পর্যাপ্ত ক্রীড়া সরঞ্জাম বা খেলাধুলার উপযোগী মাঠ। ফলে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে মারাত্মক বাধা সৃষ্টি হচ্ছে, যা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এ নিয়ে অনেকেই মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ও দুর্ভোগ
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, “মাঠের কোনো রকম সংস্কার হয়নি, যার ফলে অল্প বৃষ্টিতেই মাঠে জলাবদ্ধতা দেখা যায়। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানে ভালো কোনো ক্রীড়া সরঞ্জাম নেই।” সাকিব নামে এক শিক্ষার্থী জানান, “আমাদের কাছ থেকে কয়েক দফায় মাঠ সংস্কারের নামে ২০০ টাকা নেওয়া হলেও এখনো কোনো রকম সংস্কার করা হয়নি।” তামিম নামে আরেক শিক্ষার্থী আক্ষেপ করে বলেন, “অল্প বৃষ্টি হলেই মাঠে জলাবদ্ধতা হয়ে যায়, যা ছোট বিলের আকার ধারণ করে।”
অভিভাবকদের হতাশা
অভিভাবকরা বলছেন, “আমরা চাই এই প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া বিভাগের কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হোক।” সায়েম নামে এক ছাত্রের বাবা হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, “দেশসেরা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া কার্যক্রমের এমন বেহাল দশা খুবই হতাশাজনক। আমরা দ্রুত সংস্কার চাই।” সাব্বির নামে এক সাবেক শিক্ষার্থীও একই সুরে কথা বলেন, “মাঠ সংস্কারের আশায় ভর্তির সময় ২,৪০,০০০ টাকা গ্রহণ করা হলেও এখনো কোনো মাঠ সংস্কারের পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি।”
কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ও বাস্তব চিত্র
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বলছে, “আমাদের ক্রীড়া সরঞ্জাম বলতে গেলে অনেক কম, তবে ক্রীড়া কার্যক্রম বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানে কার্যত কোনো কার্যকর ক্রীড়া সরঞ্জাম নেই বললেই চলে; যা কিছু আছে, সেগুলোও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ক্রীড়া শিক্ষক বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠানে কিছু ক্রীড়া সরঞ্জাম থাকলেও যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাবে সেগুলোর অবস্থা ভালো নেই। প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া কার্যক্রমের সুন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য অধ্যক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “মাদ্রাসা মাঠ ও ক্রীড়া সরঞ্জাম অতিবিলম্বে সংস্কার করা হবে।” শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ক্রীড়া ও শরীরচর্চার গুরুত্ব অপরিসীম। কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর ও আনন্দময় পরিবেশ নিশ্চিত করবেন, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সবাই।
Leave a Reply