তাসনীম সিদ্দিকা-বাকৃবি প্রতিনিধি
কৃষিবিদদের অধিকার রক্ষা এবং বৈষম্য দূর করার দাবিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা আজ সোমবার রাস্তায় নেমেছেন। সকাল ১০টায় কৃষি অনুষদ ছাত্র সমিতির কার্যালয়ের সামনে থেকে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি কৃষি অনুষদের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কে আর মার্কেটে গিয়ে শেষ হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত কৃষি অনুষদের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বিএডিসি ও অন্যান্য কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ১০ম গ্রেডের (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/উপসহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা/সমমান) পদে কেবলমাত্র স্নাতক ডিগ্রিধারী কৃষিবিদদের নিয়োগ নিশ্চিত করা; ডিএই ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে নবম গ্রেডসহ অন্যান্য গ্রেডে নিয়মিত পদোন্নতি ও পদবৃদ্ধির নিশ্চয়তা; নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়ে কোটা ব্যবস্থায় বিএডিসিতে নবম গ্রেডে পদোন্নতির সুযোগ বাতিল করা; ১০ম গ্রেডের পদগুলোকে গেজেটবহির্ভূত স্বতন্ত্র পদসোপান কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করা; কৃষি ডিপ্লোমাধারীদের জন্য নতুন কোনো বিশেষায়িত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন না করে তাদেরকে কেবল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় সীমাবদ্ধ রাখা এবং ‘কৃষিবিদ’ উপাধি ব্যবহারের বৈধতা কেবলমাত্র স্নাতক ডিগ্রিধারী কৃষিবিদদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করা।
কৃষি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘দাবিগুলো নিয়ে আগামীকাল বিকেল সাড়ে তিনটায় কৃষি সচিবের সঙ্গে আমাদের প্রতিনিধিদলের বৈঠক হবে। আলোচনা না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করছি। ফল আমাদের অনুকূলে না এলে সারাবাংলা কৃষিবিদ ব্লকেডের ডাক দেওয়া হবে।’
দ্বিতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হয়নি। আমাদের এই ন্যায্য দাবি-আন্দোলনও সফল হবেই। প্রশাসনের কেউ যদি এই আন্দোলন দমন করতে চায়, তাদের জানিয়ে দিচ্ছি, একটি অন্যায়কে প্রশ্রয় দিলে হাজারটা অন্যায়ের মুখোমুখি হতে হয়। এখনো সময় আছে, ন্যায়ের পক্ষে আসুন। না হলে জবাবদিহিতার মঞ্চে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেন না।’
ডিপ্লোমাধারী কৃষি কর্মীদের উদ্দেশে আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর বৈষম্য দূর হয়েছে। এখন আর কোটা দিয়ে চাকরির সুযোগ দেওয়া যাবে না। মেধার ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা হোক। যে টিকে থাকবে, সে চাকরি পাবে।’
আন্দোলনকারীরা জানান, আগামীকাল বিকেল সাড়ে তিনটায় কৃষি সচিবের সঙ্গে আলোচনার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা। আলোচনার ফলাফল না আসা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
Leave a Reply