কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি | ক্যাম্পাস২৪.নিউজ|
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মধুপুর ক্লিনিক পাড় এলাকা যেন মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত এই এলাকায় প্রকাশ্যে চলছে ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিলসহ নানা ধরনের মাদক দ্রব্যের কেনাবেচা। এলাকাবাসীর দাবি, এই ব্যবসার পেছনে রয়েছে একটি সুসংগঠিত চক্র, যাদের পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে প্রভাবশালী মহলের। অথচ প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
মাদকের রমরমা বাণিজ্যে ধ্বংসের পথে যুবসমাজ। মধুপুর ক্লিনিক পাড় এখন আর শান্ত আবাসিক এলাকা নয়, বরং একটি ভয়ংকর মাদক স্পটে পরিণত হয়েছে। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কিশোর-কিশোরীরা দিনদিন জড়িয়ে পড়ছে এই অন্ধকার জগতে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয় মাদক বেচাকেনা, যা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। স্থানীয় লোকজন জানান, কিছু অল্পবয়সী ছেলে মাদক সরবরাহকারী হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হলো—এই অসামাজিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে গেলে তাকে হতে হয় নানা রকম হুমকির শিকার। স্থানীয় এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন,“একবার প্রতিবাদ করেছিলাম, তখন রাতের বেলা অচেনা লোকজন এসে দরজায় কড়া নেড়ে হুমকি দিয়ে গেছিল। এরপর আর সাহস হয় না কিছু বলার।”
অনেকে জানান, মাদক ব্যবসায়ীরা এতটাই প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে যে তাদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করতেও ভয় পান। মাদক বিরোধী কথা উঠলেই চালানো হয় মানসিক চাপ, অপবাদ ও শারীরিক হামলার হুমকি।
অনেকেই বলছেন, প্রশাসনের নীরবতা রহস্যজনক। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করা হলেও দেখা যায়নি কার্যকর কোনো অভিযান। অভিযোগ রয়েছে, কখনো কখনো অভিযানের নামে লোক দেখানো কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়, কিন্তু মূল হোতারা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এলাকাবাসীর দাবি, তৎপর হোক প্রশাসন।
স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ মনে করেন, এখনই সময় দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার। তারা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন—মধুপুর ক্লিনিক পাড়ে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা হোক এবং এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হোক।
মাদক একটি সমাজকে ভিতর থেকে ধ্বংস করে দেয়। এই বিপজ্জনক বিষবৃক্ষ মধুপুর ক্লিনিক পাড়ে যেভাবে শিকড় গেড়ে বসেছে, তা এখনই উপড়ে ফেলতে হবে। না হলে অচিরেই পুরো এলাকাটি মাদকের করাল গ্রাসে নিমজ্জিত হবে, যা ঠেকাতে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণকে একত্রে কাজ করতে হবে।
Leave a Reply