পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি-
রংপুরের পীরগাছায় পানি নিষ্কাশনের জায়গা সরু হওয়ায় তলিয়ে গেছে প্রায় চার একর জমির আবাদি ফসল। একইসঙ্গে পুকুরে চাষকৃত মাছ বের হয়ে গেছে। সবমিলে ৫-৬লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শহিদুল ইসলাম সহিম।
তিনি বলেন, আমার লীজকৃত চার একর জমিতে পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত পরিমাণে জায়গা ছিল কিন্তু একই এলাকার মৃণাল বর্মন ভুট্টুর সহযোগিতায় তার ভাতিজারা প্রভাব খাটিয়ে নালার সাথে পুকুর পাড় দিয়ে পানি নিষ্কাশনের রাস্তা বন্ধ করে দেন। এতে কয়েক গ্রামের পানি নেমে ওই এলাকায় জমা হয়ে থাকে। পানির ধীরগতির ফলে কয়েকজন কৃষকের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষকরা। কয়েক দফায় বলার পরও তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
অপরদিকে পানি নিষ্কাশনের জায়গা প্রশস্ত করা ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পক্ষে শহিদুল ইসলাম সহিম। ঘটনাটি উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের পূর্বদেবু গ্রামে।
জানা যায়, ওই ইউনিয়নের তবারক আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম সহিম প্রায় ১৫বছর থেকে চার একর জমি লীজ নিয়ে চাষাবাদ করে আসছেন। কিন্তু দুই বছর আগে পানি নিষ্কাশনের নালার সাথে পুকুর খনন করে পাড় দেওয়ার কারণে পর্যাপ্ত পানি বের হতে না পারায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে বোরো ধান সম্পূর্ণ ডুবে গেছে কিছু ধান গাছ আংশিক ডুবে গেছে। এমনকি পুকুর পাড় তলিয়ে যাওয়ার কারণে লক্ষাধিক টাকার মাছ বের হয়ে গেছে।
এলাকাবাসী আব্দুল আজিজ বলেন, আগে এ এলাকায় পানি জমলেও সঙ্গে সঙ্গে নেমে যেত। কিন্তু পুকুর খনন করে পাড় দেওয়ার কারণে পানি জমে থাকে। ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। যদি পুকুর পাড় একটু সরে দেওয়া যেত পাশাপাশি নালাটি সংস্কার করা হতো তাহলে কৃষকের এমন ক্ষয়ক্ষতি হতো না। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি সমাধানের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত মৃণাল বর্মন ভুট্টুর ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ওই ব্লকের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে জায়গাটি পরিদর্শন করেছি। যদি পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত জায়গা থাকতো তাহলে কৃষি ফসল এতো নিমজ্জিত হতো না।
এদিকে পীরগাছার নদ-নদীর প্লাবনভূমি, অববাহিকাসহ নিচু এলাকার প্রায় ২০০ হেক্টর জমির ধান, বাদাম, ভুট্টা, মরিচসহ বিভিন্ন কৃষি ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম ৮৬ হেক্টর জমির কৃষি ফসল নিমজ্জিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
Leave a Reply