পেশায় তিনি পুলিশ কর্মকর্তা। বর্তমান পদ অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি)। রাজধানীর উপকণ্ঠে তাঁর আবাসন ব্যবসা। আছে ১২ বিঘা জমিতে বাংলোবাড়ি। মেঘনা নদীর মাঝে রিসোর্ট। রয়েছে ওষুধ কারখানাসহ বিভিন্ন এলাকায় জমি। ২৬ বছর পুলিশের চাকরি করে এত সব সম্পদের মালিক হয়েছেন গাজী মোজাম্মেল হক।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পুলিশের এই কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ‘আনন্দ পুলিশ হাউজিং সোসাইটি’ নামে ১ হাজার ২০০ বিঘা জমির ওপর আবাসন ব্যবসা গড়ে তুলেছেন। তাঁর স্ত্রী ফারজানা মোজাম্মেলের নামে রয়েছে ‘আনন্দ প্রপার্টিজ লিমিটেড’ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান। ফারজানার নামে রূপগঞ্জের বিভিন্ন মৌজায় অন্তত ৮০ বিঘা জমি রয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, গাজী মোজাম্মেল হক ১৯৯৮ সালে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে যোগ দেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছর তিনি পুলিশ সদর দপ্তরে ‘ডেভেলপমেন্ট’ শাখায় কর্মরত ছিলেন। অতিরিক্ত ডিআইজি হওয়ার পরও এই শাখায় ছিলেন তিনি। পুলিশের এই শাখার কাজ বাহিনীর জমিজমা দেখাশোনা করা। ১ জানুয়ারি তাঁকে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সরিয়ে অ্যান্টিটেররিজম ইউনিটে বদলি করা হয়।
আনন্দ পুলিশ হাউজিং সোসাইটির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালে এই আবাসন প্রকল্পের যাত্রা শুরু। গত ১৮ বছরে রূপগঞ্জে এই হাউজিংয়ের নামে কেনা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ২০০ বিঘা জমি।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, গাজী মোজাম্মেল ২০০৬ সাল থেকে রূপগঞ্জে জমি কেনা শুরু করেন। পরের বছর পুলিশের কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত ও কর্মরত কর্মকর্তাকে নিয়ে গঠন করেন ‘আনন্দ পুলিশ পরিবার কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি’। এরপর আনন্দ পুলিশ হাউজিং সোসাইটি নামে আবাসন ব্যবসা শুরু করেন। গাজী মোজাম্মেল প্রকল্প পরিচালক।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, আনন্দ পুলিশ হাউজিং সোসাইটি নামে পুলিশের কোনো প্রকল্প নেই।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে ‘পুলিশ’ শব্দ যুক্ত করা হয়েছে ব্যবসায়িক সুবিধার জন্য। এই প্রকল্পে বেনজীর আহমেদের একটি প্লট রয়েছে। সেখানে তিনি বাড়ি করেছেন। বেনজীরের সেই বাড়িটি দুর্নীতি দমন কমিশন ইতিমধ্যে জব্দ করেছে।
Leave a Reply