স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগের রক্ষণাবেক্ষন কাজসহ রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুটি দল।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে দুদক গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায়ের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় সহকারী পরিচালক মো: সোহরাব হোসেন সোহেল ও উপসহকারী পরিচালক মো: আল-আমিন হোসেন সাথে ছিলেন।
গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায় জানান, আজ বৃহস্পতিবার দিনভর গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগ হতে তথ্য সংগ্রহ করে টেকেরহাট-ঘোনাপাড়া ৩৯ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মানে দীর্ঘসূত্রিতা ও অনিয়মের সরেজমিন তথ্য সংগ্রহ করে। এসময় গোপালগঞ্জ সদর হতে টেকেরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের কিছু অংশের কাজ কয়েক বছরেও শেষ হয়নি। কিছু ব্রীজের উপর পিচ না থাকায় সমতল রাস্তা হতে ৫-১০ ইঞ্চি নিচু হওয়ায় ও সতর্কতা সাইন না থাকায় হঠাৎ গাড়ি ব্রেক করায় প্রায় দূর্ঘটনা ঘটছে ও গাড়ীর ক্ষতি হচ্ছে। ২০২২ সালে কাজ শুরু হলেও অদ্যাবদি কাজ শেষ না হওয়ায় জনদুর্ভোগ হচ্ছে বলে প্রমাণ পেয়েছে দলটি।
সহকারী পরিচালক আরো জানান, গোপালগঞ্জ শহরের প্রবেশ পথে পুলিশ লাইন্সের আগে হরিদাসপুর সেতুতে নিম্নমানের লাইট স্থাপনের পর পরই নষ্ট হয়ে গেছে। ঠিক না করায় চুরি ডাকাতিসহ নানা অনিয়ম হচ্ছে বলে স্থানীয়ভাবে জানাগেছে। সন্ধ্যার পর সেখান দিয়ে সাধারন জনগণ হেটে যেতে পারেন না ফলে জন দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। সড়ক ও সেতুর মেরামত খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার না করায় সাধারন জনগণ ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন বলে প্রমানিত হয়েছে।
বিজন কুমার রায় আরো বলেন, গোপালগঞ্জ থেকে নড়াইল যাওয়ার পথে চাপাইল সেতুর নিম্নমানের লাইটসমূহ দীর্ঘদিন নষ্ট হলেও মেরামত না করায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। আশেপাশের গ্রামের মানুষ সন্ধ্যার পর সেতু দিয়ে পারাপারে ভয় পান। মাঝে মাঝে দুর্ঘটনাও হচ্ছে। মেরামত খাতের অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার না করায় লাইটগুলো ঠিক হচ্ছে না। গোপালগঞ্জে বিনোদনের জায়গার অভাবে অনেকে বিকালে চাপাইল সেতুতে ঘুরতে যান। কিন্তু সন্ধ্যার পর সেতুতে লাইট না থাকায় অনেকে দুর্ভোগে পড়েন। চাপাইল সেতুটি তৈরী করে এলজিইডি বিভাগ। গেজেট করে সড়ক বিভাগে হস্তান্তর হলেও সড়ক বিভাগ দায়িত্ব নিয়ে কাজ না করায় লাইট নস্ট থাকার পরও ঠিক হচ্ছে না। এছাড়া ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জের হরিদাসপুর সেতু ও চাপাইল সেতুর লাইট দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হলেও মেইনটেইনেন্স না করায় জনদুর্ভোগের বিষয়ে সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
অন্যদিকে, গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া থেকে টুঙ্গিপাড়া সড়কে ৬০০টি ৩০ ওয়াটের স্ট্রিট লাইটের পরিবর্তে ২০ ওয়াট লাইট দেয়ায় আলো কম হয়ে জনদুর্ভোগ ও ঠিকাদারের সাথে যোগসাজশ করে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ বিষয়ে সরেজমিনে লাইট পরিদর্শন করা হয়। এসব অনিয়ম ও অভিযোগ তদন্ত করে দুদুকের টিম সত্যতা পেয়েছেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায় বলেন, ঢাকা-খুলনা মহাসড়েকের গোপালগঞ্জ অংশে মেরামতের বাজেটের বেশিরভাগ অর্থ যথাযথ ব্যয় হচ্ছেনা মর্মে জানা গেছে। বিগত ৪-৫ বছরে ব্যায়ের তালিকা যাচাই করলে কোটি কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দুদক প্রধান কার্যালয়ে দাখিল করা হবে।
Leave a Reply