তা’মীরুল মিল্লাত প্রতিনিধি -সাব্বির হোসাইন
টঙ্গী, ৮ জুলাই: গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় গত ছয় মাসে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ১২ জন শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। মাদ্রাসার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। অধ্যক্ষ মাওলানা হেফজুর রহমান বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের নীতি-নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ নিয়মিত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
মাদ্রাসার শৃঙ্খলা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর চার দফায় এসব শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রথম দফায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসার নিয়মশৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ২ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। এরা হলেন ৯ম (গ) শাখার রোল চার লাবিব এবং আলিম ১ম বর্ষের সাধারণ (ক) শাখার রোল দুইশত আট- ইয়াসিন আরাফাত। লাবিবকে এই বিশৃঙ্খলার প্রধান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের তাদের দুজনের সাথে সম্পর্ক থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় দফায় গত ২২ মে প্রতিষ্ঠানের নিয়মশৃঙ্খলা ভঙ্গ ও নৈতিক স্খলনের জন্য আরও ৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। তারা হলেন দশম সাধারণ (ক) শাখার রোল ৫০ আবু বক্কর সিদ্দিক, দশম সাধারণ (খ) শাখার রোল ৫৮ মুজাহিদুল ইসলাম ফাহিল এবং ৮ম শ্রেণির (ঘ) শাখার রোল ৩৩ আর রাফি ইসলাম।
তৃতীয় দফায় গত ২৫ জুন মাদ্রাসা হোস্টেলে ভাঙচুর করার অপরাধে ২ জন দাখিল পরীক্ষার্থীকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করা হয়। একই সাথে তাদের আলিম শ্রেণিতে এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবে না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়। এই দুজনই বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী, তাহমিদ আজাদ ও তাসনিমুল ইসলাম জিহাদ।
চতুর্থ দফায় সর্বশেষ ৫ জন শিক্ষার্থীকে সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়। এই পাঁচজনই ৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তারা হলেন মো. মুজাহিদুল ইসলাম (গ) – ৪৩, জুবায়ের ইবনে আওতাফ (খ) – ৭০, মাহির খান (ঙ) – ৪৩, আব্দুল্লাহ বিন ফয়সাল (খ)- ৬২ এবং নাসিমুল হাসান নোহান (গ) – ৯০।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা হেফজুর রহমান বলেন, “প্রতিষ্ঠানের নিয়ম ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কাজে শিক্ষার্থীরা জড়িত থাকলে আমরা তাদেরকে বহিষ্কার করছি। আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”
শৃঙ্খলা বিভাগের প্রধান মাওলানা নুরুল হক জানান, “শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা ঠিক রাখতে শৃঙ্খলা বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি অভিযানও আমরা পরিচালনা করেছি। অভিযান সুচারুরূপে করার জন্য আমরা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারও করেছি। আগামীতে আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে।”
মাদ্রাসা নিয়ন্ত্রিত তিতুমীর হলের একজন শিক্ষার্থী ফুয়াদ জানান, “প্রতিষ্ঠানে ও হলে স্মার্ট মোবাইল ফোন যাতে কেউ ব্যবহার করতে না পারে তার জন্য আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তল্লাশি করা হচ্ছে, যা প্রশংসার দাবি রাখে।”
অভিভাবকরাও কর্তৃপক্ষের এমন কার্যক্রমের প্রশংসা করেছেন। তারা বলছেন, এই ধরনের কার্যক্রম চলমান থাকলে শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা ও নৈতিকতার মান আরও উন্নত হবে।
Leave a Reply