কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় রাজনৈতিক মহলে এখন তীব্র চাঞ্চল্য। ৫ই আগস্ট এর পূর্বে আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্বাচনী প্রচারণে অংশ নেওয়া ও ব্যাপক আওয়ামী ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে অভিযুক্ত জাহিদ হাসানের বিএনপির সদস্য পদ পাওয়ায় শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, জাহিদ দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সাজু তালুকদারের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন।
সূত্র মতে, জাহিদ একসময় স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। কিন্তু গত ৫ আগস্টের আগে তিনি উপজেলা বিএনপির নির্দেশনা অমান্য করে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নেন এবং ভোট প্রচারণায় নামেন। এমনকি আওয়ামী লীগের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মতি শিউলির সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আক্তারুজ্জামান রনি তাকে সতর্ক করলে জাহিদ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে তিনি আর বিএনপি বা স্বেচ্ছাসেবক দল করবেন না।
কিন্তু বিস্ময়করভাবে, ৫ আগস্টের পর জাহিদ আবার বিএনপির বিভিন্ন নেতার কাছে সুপারিশ নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলে ফেরার চেষ্টা করেন। রাজনৈতিক আদর্শহীনতা এবং আওয়ামী সংশ্লিষ্টতার কারণে তাকে সবাই ফিরিয়ে দিলেও, হঠাৎ করেই অদৃশ্য কোনো প্রভাবে তিনি হাতিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য পদ বাগিয়ে নেন।
সদস্য পদ পাওয়ার পর থেকেই জাহিদ আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ। কোরবানির সময় জাকাতের গরুর ভুড়ি ও পা জোর করে নেওয়া, গাড়িতে তেল জোর করে নেওয়া, মামলা-হামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, এবং সুপারিশের নামে চাঁদাবাজির মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এছাড়া, তিনি নিজেকে কখনো ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি, আবার কখনো সাংগঠনিক নেতা পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন বলেও অভিযোগ।
বিএনপির স্থানীয় ও তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা প্রশ্ন তুলেছেন, একজন আওয়ামী লীগপন্থী, সুবিধাবাদী ও অভিযুক্ত চাঁদাবাজ কীভাবে বিএনপির মতো একটি আদর্শিক দলে সদস্য পদ পেতে পারে? তারা দ্রুত এই বিষয়ে উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা ও কার্যকর পদক্ষেপ আশা করছেন।
Leave a Reply