শাহরিয়ার স্বর্ণব, হাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
গত ৩০ জুন রাতে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন(বিপিএসসি) এর ওয়েবসাইটে ৪৪ তম বিসিএস এর ফলাফল প্রকাশিত হয়। ১৬৯০ টি পদে মেধাক্রম অনুসারে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের বিভিন্ন পদে মনোনয়ন প্রদান করা হয়।
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দিনাজপুরে হাজী মোহাম্মদ দানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরাও তাদের মেধার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন।।যার ধারাবাহিকতায় হাবিপ্রবি’র কৃষি অনুষদের ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপক দেবনাথ শিক্ষা ক্যাডারে (কৃষি) প্রথম ও মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান রুমন মৎস্য ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন।
এছাড়াও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হাবিপ্রবি’র অন্যান্য ক্যাডার প্রাপ্তরা হলেন-মনির উজ জামান,আসাদুজ্জামান রিফাত,রাশেদ শাহরিয়ার রিপন,রুবায়েত ইসলাম,গোলাম মোস্তফা,তাওহিদুর রহমান,কাফি রোমান,রাসেল আহসান,রোমানুল ইসলাম,মোমিনুল ইসলাম
ক্যাডার হওয়ার সাফল্যের কৌশল জানতে চাইলে মাহমুদুল হাসান রুমন জানান, ৪৪ তম বিসিএস এর আকাঙ্ক্ষিত ফলাফল প্রকাশিত হলো সোমবার রাতে। প্রায় সাড়ে তিন বছরের অপেক্ষা! মৎস্য ক্যাডারে নিজের রোল একদম শুরুতেই! সাফল্য বিষয়টি যদিও আপেক্ষিক তবুও বিষয়টি আমাকে আমার ৩.৫ বছরের অপেক্ষাকে পুরস্কৃত করেছে। তখনও বিষয়টি খেয়াল হয়নি, ফলাফলের ঘোর কাটতেই মনে হলো মৎস্য ক্যাডারে তো আমার অবস্থান প্রথম!তারও বেশিকিছু পরে খেয়াল হলো আমি প্রথম মানে তো আমার হাবিপ্রবি ও প্রথম। যৎসামান্য এ সাফল্যের মাহাত্ম্য এখানেই। ছোট্ট একটি পরিসরে নিজের ক্যাম্পাসকে বাকিদের সামনে রাখতে পেরেছি, এ আমার একান্ত গৌরব। নিজের সফলতার মাত্রা এখানেই বেড়ে গেছে বহুগুণে। ক্যাম্পাসে আমাদের শুরুর দিনগুলো থেকে প্রিয় হাবিপ্রবি এখন অনেকটাই এগিয়ে। নিজের যৎসামান্য অর্জনে যতটা না আমি গর্বিত, তার চেয়ে বেশি আশাবাদী আমাদের নতুন প্রজন্মদের নিয়ে। আমি শুধুই বিসিএস কেন্দ্রীক ছিলাম আর অন্য বিষয়ে তেমন দক্ষতাও নেই বলা যায়। তাই অনুজরা, যারা বিসিএস নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবছো, তোমাদের যাবতীয় জিজ্ঞাসা-তথ্য সহযোগিতার তোমাদের এই বড়ভাই সর্বদাই আন্তরিক। তবে বর্তমানের প্রক্ষাপটে শুধু বিসিএস কেন্দ্রীক না হয়ে ক্যারিয়ারের সব সেক্টরগুলোকে আরো ভালোভাবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। নিজ নিজ পারিপার্শ্বিকতা যাচাই করে অনুজরা তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিবে বলে আশা রাখি। ক্যারিয়ারের যে দিকটাই তোমরা গ্রহণ করো, সেটা যেন সুপরিকল্পিত হয়। এলোমেলো ইফোর্ট দিয়ে তোমাদের পরিশ্রমগুলো যেন কম মূল্যায়িত না হয়।সঠিক লক্ষ্য নির্ধারন > সঠিক পরিকল্পনা > পরিশ্রম > অধ্যবসায় – এসবের সমন্বয়ে তোমরা যে কাজই করবে সেখানেই সফলতা এসে হাজির হবে। তোমাদের আগামীর সফলতা আমাদের ক্যাম্পাসকে আরো রঙ্গিন করে তুলবে এই প্রত্যাশা রইলো।
শিক্ষা ক্যাডারে (কৃষি) প্রথম হওয়া হাবিপ্রবি’র শিক্ষার্থী দীপক দেবনাথ জানান, দেশের বেশিরভাগ পাবলিক ভার্সিটির স্টুডেন্টের মত আমিও অনার্স লাইফের স্রোতে গা ভাসিয়ে ভেবেছিলাম বিসিএস ক্যাডার হতে হবে। পরবর্তীতে সিজিপিএ টা একটু ভালো হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবার তীব্র বাসনা ছিল। অনেক সময়, শ্রম দিয়েও যখন যোগ্যতার বিচারে এতে অকৃতকার্য হলাম তখন বিসিএসের প্রতি শতভাগ ঝুকে গেছি।যেহেতু শুরুতে অন্যদিকে টার্গেট ছিলো তাই বিসিএস প্রিলির জন্য খুবই কম সময় পেয়েছিলাম। তবে সিনিয়র ভাই আপু ও আমার অনেক ফ্রেন্ডের পরামর্শে কৌশলী হয়ে বিগত সালের প্রশ্ন এনালাইসিস করে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে। একসেট বই বার বার পড়েছি, জব সল্যুশন শেষ করেছি এবং প্রচুর মডেল টেস্ট দিয়েছি। আর সাথে পত্রিকা (ইংরেজি এবং বাংলা) পড়া রিটেন ও ভাইভাতে হেল্প করেছে।গ্র্যাজুয়েশন কম্পলিট না করেই জব এর প্রিপারেশন নেয়ার প্রয়োজন কেনো আছে বা কেনো নেই, সেটা নিজের বেসিকের উপর ডিপেন্ড করবে। যারা ছোট বেলা থেকেই রেগুলার পড়াশোনা করেছে, গণিত এবং ইংরেজির বেইস যাদের ভালো আছে তাদের গ্রাজুয়েশনের আগে প্রস্তুতি নেয়ার কারণ নেই। তাছাড়া অনার্সে পড়ার চাপ থাকে অনেক। জব প্রিপারেশন কন্টিনিউ করা টাফ, এতে মাথায় এক্সট্রা প্রেশার পড়বে। তবে কেউ যদি অনার্স থেকে রেগুলার পত্রিকা ( বাংলা এবং ইংরেজির অন্তত একটা কলাম) পড়ে তাহলে তারা অন্যদের চেয়ে প্রিলি রিটেন ভাইভার অনেক আগায় থাকবে। পাশাপাশি ইংরেজি বা গণিতের টিউশন করাতে পারলে তো আরো ভালো।
উল্লেখ্য, মোট ১৭১০টি শূন্যপদের মধ্যে ১৬৯০ জন প্রার্থীকে ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করলেও
যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় পেশাগত ক্যাডারে ২০টি পদ অপরিপূর্ণ রয়ে গিয়েছে।
Leave a Reply