নিশান খান জাবি প্রতিনিধি
আপিল বিভাগের দেয়া জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের খালাসের রায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (২৭ মে) রাত এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে মিছিল নিয়ে তারা শহীদ মিনার সড়ক ঘুরে পুনরায় বটতলায় গিয়ে সমাবেশ করেন।
এ সময় ছাত্রফ্রন্টের সংগঠক সজিব আহমেদ জেনিচ বলেন, “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই—এই ইন্টারিম সরকার, এই পুলিশ এবং তাদের সমস্ত বাহিনী রাজাকারদের পাহারাদার। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র-জনতা—সবার প্রত্যাশা ছিল একটি সুস্থ ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থা, কিন্তু তা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এটিএম আজহারের বিচার অবিলম্বে পুনরায় শুরু করতে হবে; তাকে গ্রেফতার করে সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে বিচারের আওতায় আনতে হবে। যে প্রক্রিয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে, তা অন্যায্য এবং কোনো ধরনের সুষ্ঠু তদন্ত আমলে নেওয়া হয়নি। ১৯৭১-এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কোনো সরকার বাংলাদেশে টিকতে পারবে না। আর সেই ৭১-এ মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত জামায়াত-শিবিরের মতো রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।”
এ সময় ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) এর সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য বলেন, “আমরা নতুন বাংলাদেশে দেখছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও একই প্রক্রিয়ায় একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে নানারকম পাঁয়তারা চালাচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আমাদের প্রত্যাশা ছিল—রাজনীতি হবে সর্বোচ্চ বাংলাদেশপন্থী, মুক্তিযুদ্ধপন্থী। কিন্তু আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিচার বিভাগকেও দলীয়করণের পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, যখন রাজাকার আজহারকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। সুতরাং, এমন একতরফা রায় তদন্ত ও বিচারব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলেই আমরা মনে করি। আজ দেশের প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই রায়ের প্রতিবাদে মিছিল হয়েছে এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) এই মিছিলে হামলার ঘটনাও ঘটেছে।”
প্রসঙ্গত, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে সর্বোচ্চ আদালত এ রায় দেন। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
Leave a Reply