রিপন শাহরিয়ার, বেরোবি:
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ড.ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কোনোরকম কাজ ছাড়াই বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) রংপুর অফিসের পরিচালক হোসেন শরীফ।
বুধবার দুদকের রংপুর অফিসের পরিচালক হোসেন শরীফের নেতৃত্বে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল বেরোবির রিসার্চ অফিসারদের বিরুদ্ধে অফিসে অনিয়মিত এবং তেমন কোনো কাজ ছাড়াই বসে বসে প্রতি মাসে বেতন ভাতা উত্তোলনের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেন।
দুদকের রংপুর অফিসের পরিচালক হোসেন শরীফ বলেন, সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. জলিল মিয়ার ইচ্ছায় ২০০৯ সালে ড.ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর এখানে তিনি কয়েকজন রিসার্চ অফিসারসহ মোট ২০৫ জন ফেলো ভর্তি করান কিন্তু এইটি কোনো অনুমোদন ও নীতিমালা না থাকায় সেই ফেলোরা আর ডিগ্রি সম্পন্ন করতে পারেনি। আর এই ইনস্টিটিউটে আমি এইটি অভিযান চালিয়ে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পেয়েছি। আমরা এই রিপোর্টগুলো কমিশনে প্রেরণ করব সেখান থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সূত্র জানায়, ড.ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের গবেষক ভর্তির অনুমোদন না পাওয়ায় বিষয়টি ২০২২ সালে জানাজানি হলে এর পর থেকে তেমন কোনো কাজ নেই এই ইন্সটিটিউটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, ইন্সটিটিউটে সর্বমোট সাতজন কর্মকর্তা ও একজন কম্পিউটার অপারেটর এবং একজন এমএলএসএস কর্মরত আছেন। সাতজন কর্মকর্তার মধ্যে আছেন অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার খন্দকার গোলাম মোস্তফা, প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ড. প্রসন্নজিৎ সরকার, সাবেক উপাচার্য আবদুল জলিলের মেয়ে রুমানা ফেরদৌসী জলীল, ডেপুটি রেজিস্ট্রার সিরাজুম মুনিরা, সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার আবু সায়েম, সিনিয়র রিসার্চ অফিসার ও মুখতার ইলাহীর বোন মেহজাবিন ইলাহি এবং রিসার্চ অফিসার ড. মো. রোকনুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এই অফিসারদের গবেষণা কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে গিয়ে দেখা যায়, কোনো কর্মকর্তারই কোনো গবেষণা নেই। গবেষণা বিষয়ক ওয়েবসাইট রিসার্চ গেইটে খুঁজে মাত্র ড. প্রসন্নজিৎ সরকার ও সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার আবু সায়েমের দুই- তিনটি গবেষণা সংক্রান্ত আর্টিকেল পাওয়া যায়, বাকিদের কোনো গবেষণা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয় যোগদানের পর জানতে পারি এই ইনস্টিটিউটের পরিচালক আমি নিজে। পরে নিজের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমি ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউট সম্পর্কে খোঁজ খবর নিই। এটির প্রথম দিকে অনুমোদন ছিল না ২০২৪ সালে মে মাসে এই ইনস্টিটিউটের অনুমোদন দেওয়া হলেও নীতিমালা তৈরি করা হয়নি। আমি নিজ উদ্যোগে নীতিমালা তৈরি করার জন্য কাজ করছি।
উল্লেখ্য ,এর আগে এই ইনস্টিটিউটের রিসার্চ অফিসারদের বিরুদ্ধে অফিসে অনিয়মিত এবং তেমন কোনো কাজ ছাড়াই বসে বসে প্রতি মাসে বেতন পাওয়ার অভিযোগ নিয়ে ক্যাম্পাস২৪.নিউজ সহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের সংবাদ প্রকাশের পর অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
Leave a Reply