ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) প্রধান ফটকে এসবির পরিবহনের বাস ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে সোচ্চার স্টুডেন্ট’স নেটওয়ার্ক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-দপ্তর সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংগঠনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল রাহাত ও সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ শিবলু এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুই শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য এবং তিন শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করেছে। আমরা এই শাস্তিকে অতিরিক্ত, কঠোর এবং শিক্ষার্থীবান্ধব ন্যায়নীতির পরিপন্থী মনে করছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল দায়িত্ব শিক্ষাদান, সংশোধন ও ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা। তবে বর্তমান সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, যা মানবাধিকারের মৌলিক চেতনারও পরিপন্থী।”
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়,
“বিশ্ববিদ্যালয় কখনোই ভয় ও আতঙ্কের জায়গা হতে পারে না; বরং এটি হওয়া উচিত গণতান্ত্রিক, ন্যায়সংগত ও অংশগ্রহণমূলক পরিবেশের প্রতীক। কোনো শিক্ষার্থীর অপরাধ বা ভুলের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও প্রশাসন মানবিক ও শিক্ষাবান্ধব দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা প্রশাসনকে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছি এবং শিক্ষার্থীদের জন্য পুনর্বাসনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।”
সোচ্চার স্টুডেন্ট’স নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করেছে, তারা শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা ও নিরাপদ ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠায় অবিচল ভূমিকা রাখবে। একইসাথে তারা আশা প্রকাশ করেছে যে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতের সিদ্ধান্তে মানবিকতা, ন্যায়বোধ ও সুবিবেচনার প্রাধান্য দেবে।
প্রসঙ্গত, গত এক দশক ধরে দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের গল্প তুলে ধরা এবং নির্যাতনের ঘটনা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘সোচ্চার-টর্চার ওয়াচডগ বাংলাদেশ’।
উল্লেখ্য, গত সিন্ডিকেট সভায় পাঁচ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন— বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শাহরিয়ার নাজিম এবং মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মোস্তাফিজুর রহমান সায়েম। আর ছয় মাসের জন্য বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন— মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল মান্নান লুমান, সৈয়দ সাজিদ হোসেন ও তাকবির হাসান হৃদয়।
Leave a Reply