
মূলত, সৌদি আরবের ক্লাব আল-হিলাল তাকে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে ছেড়ে দেওয়ায় একরাশ স্বপ্ন নিয়েই ব্রাজিলে এসেছিলেন ৩৩ বছর বয়সী এই তারকা। কিন্তু ঘরের মাঠেও ভাগ্য তার সঙ্গে সুহৃদ হয়নি। এখন অবনমনের লড়াইয়ে জর্জরিত সান্তোস, নেইমার নিজেও নিয়মিত মাঠে ফিরতে পারছেন না। সর্বশেষ হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কবলে পড়ে পুরোপুরি সুস্থতার আশায় মাঠের বাইরে দিন গুনছেন ব্রাজিলিয়ান এই সুপারস্টার।
এরই মাঝে আরও এক দুঃসংবাদ পেতে যাচ্ছেন নেইমার। মূলত সান্তোস থেকে তার বিদায়ের সম্ভাবনা বাড়ছে। তার বাবা ও এজেন্টকে ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন করে চুক্তির ব্যাপারে দ্বিধায় রয়েছেন তারা। ইনজুরিতে বিশ্বকাপেও এই ব্রাজিলিয়ান তারকা জায়গা হারানোর ঝুঁকিতে। এছাড়া দুই মাস পর সান্তোসের সঙ্গে তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে, এতে বছরের শেষে নেইমারের সান্তোস ছাড়ার সম্ভাবনা জেগেছে।
এক প্রতিবেদনে গ্লোবো জানিয়েছিল, সান্তোসের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৬ মাসের চুক্তি বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন নেইমার সিনিয়র। কেননা, এ বছর শেষে সিরি এ ক্লাবে তার ছেলের মেয়াদ ফুরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু চুক্তি নবায়নে আগ্রহ দেখায়নি সান্তোস। অন্যদিকে দরিভাল জুনিয়রের পর কার্লো আনচেলত্তি কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নেইমারকে জাতীয় দলে ডাকা হয়নি, এতে নেইমার নিজেও বর্তমানে ব্রাজিল জাতীয় দলে প্রাধান্য খুইয়েছেন। গত জুন থেকে আনচেলোত্তি তার পজিশনে অন্য খেলোয়াড়দের ওপর ভরসা রেখেছেন ইতালিয়ান এই মাইন্ডমাস্টার।
২০২৩ সাল থেকেই ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করছেন নেইমার। পিএসজি থেকে আল-হিলালে মোটা অঙ্কের ট্রান্সফারেও ভাগ্য বদলায়নি তার। আল-হিলালে যোগ দেওয়ার কিছুদিন পরই ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় ৩৩ বছর বয়সী এই তারকার, এরপর প্রায় এক বছর মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। সুস্থ হয়ে ফেরার পরপরই হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে আক্রান্ত হন, যে কারণে চলতি বছরের জানুয়ারিতে শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফেরেন। আর হ্যামস্ট্রিং সমস্যায় ক্লাব ও দেশের অনেক ম্যাচ মিস করেছেন তিনি।
এ নিয়ে চলতি অক্টোবরেই আনচেলত্তি জানিয়েছিলেন, ‘শারীরিকভাবে ফিট থাকলে নেইমার এই দলে সেরা মানের খেলা দেখাতে পারেন। তার প্রতিভা তাকে বিশ্বের যেকোনো দলে খেলার যোগ্য করে।’
এখনও নেইমারের দল থেকে কোনো বড় সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে সাম্প্রতিক খবরে বলা হচ্ছে, বার্সেলোনার সাবেক সতীর্থ লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজের সঙ্গে এমএলএস-এর ইন্টার মায়ামিতে যোগ দিতে পারেন নেইমার। সার্জিও বুস্কেটস ও জর্ডি আলবার অবসরে মায়ামি নেইমারকে ডেজিগনেটেড প্লেয়ার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জায়গা পাবে বলে মনে করছে, যেখানে মেসি এবং সম্ভবত রদ্রিগো দি পলও থাকতে পারেন।
তবে এ নিয়ে বেশ কিছু জটিলতাও দেখা দিচ্ছে। নেইমারের শরীর এখনও চোটে জর্জরিত। পাশাপাশি, তার ভবিষ্যৎ নিয়েও নানা জল্পনা-কল্পনা রয়েছে। একইসঙ্গে তার জীবনযাত্রাও নিজের সিদ্ধান্তে বড় প্রভাবক হয়ে দাঁড়াতে পারে। শেষমেশ মায়ামির সমীকরণ না মিললে ২০২৬ বিশ্বকাপের আগে ক্লাব শূন্যতায় পড়তে পারেন ব্রাজিলিয়ান এই সুপারস্টার। কেননা, মায়ামি ছাড়া আর কোনো ক্লাবই তাকে প্রস্তাব দেয়নি।
আগামী ৩১ ডিসেম্বর সান্তোসের সঙ্গে নেইমারের চুক্তি শেষ হবে। অবশ্য, গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে মাঠের বাইরে তিনি। ফেরার দিনক্ষণও এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয়। তবে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠলে আগামী ৩ নভেম্বর ফোর্তালেজার বিপক্ষে সান্তোসের পরবর্তী ম্যাচে তাকে দেখতে পারেন ভক্তরা।
Leave a Reply