
শাহজালাল শ্রাবণ, গঙ্গাচড়া (রংপুর):
রংপুর–১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী মোটরসাইকেল শোডাউনে অংশ নিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নুর আলমের (৫৮) জানাজায় আবেগঘন বক্তব্য দেন তার দ্বিতীয় পুত্র মিজানুর রহমান (৩৫)। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা ইসলামের জন্য কাজ করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। এতে আমাদের কোনো দুঃখ নেই। আপনারা সবাই বাবার জন্য দোয়া করবেন—আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। তিনি যে আন্দোলন করে গেছেন, তা আমরা চালিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।’
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে রংপুর–১ আসনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী মো. রায়হান সিরাজীর নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে মোটরসাইকেল শোডাউন বের হয়। এ সময় গঙ্গাচড়ার আলমবিদিতর ইউনিয়নের সয়রাবাড়ী এলাকায় মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্রিজের পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হন নুর আলম। পরে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানাজার পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এমপি প্রার্থী রায়হান সিরাজী বলেন, ‘আজ নুর আলম ভাইয়ের জায়গায় আমি হলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করতাম। শহীদের মৃত্যু আমরা হৃদয়ে ধারণ করি। আল্লাহর কাছে দোয়া করি—নুর আলম ভাইয়ের শাহাদাত যেন কবুল হয়।’
জানাজায় ইমামতি করেন করেন মাওলানা বশির উদ্দিন। তিনি জানাজাপূর্ব বক্তব্যে বলেন, ‘মৃতৃ নুর আলম ভাই কে খুব কাছে থেকে দেখেছি। তিনি দ্বীনের কাজে নিবেদিত প্রাণ হিসেবে সবসময় কাজ করেছেন।’
জামায়াতের নিবেদিত কর্মী নুর আলমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং পরিবারের খোঁজখবর নেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দিনাজপুর–রংপুর অঞ্চল পরিচালক ও কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, রংপুর মহানগরী জামায়াতের আমির মাওলানা এটিএম আজম খান, রংপুর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা এনামুল হক, রংপুর মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি কে এম আনোয়ারুল হক কাজল, মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মো. রায়হান সিরাজী, আল আমিন হাসান,গঙ্গাচড়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা নায়েবুজ্জামান, পশুরাম থানা আমির অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম,হাজিরহাট থানা আমির অধ্যাপক বেলাল হোসেন, গঙ্গাচড়া উপজেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক তাজ উদ্দিন আহমেদ,গঙ্গাচড়া উপজেলা শ্রমিক সভাপতি মাওলানা শোয়াইবুর রহমানসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
নুর আলম বশির হিমাগারের কর্মকর্তা ছিলেন। তার পাঁচ সন্তান—চার ছেলে ও এক মেয়ে। রংপুর নগরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীরহাট এলাকার মৃত মনছুর আলীর ছেলে নুর আলম স্থানীয়ভাবে শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।
জানাজা শেষে তার নির্মিত মসজিদের পাশেই তাকে দাফন করা হয়। দাফনের পর শোকাহত পরিবারের খোঁজ নেন প্রার্থী রায়হান সিরাজী, পরশুরাম থানা আমীর মাহবুব আলম, গংগাচড়া উপজেলা আমির মাওলানা নায়েবুজ্জামান সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
Leave a Reply