স্টাফ করেসপন্ডেন্ট:
নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য মোটরসাইকেল গ্যারেজ কে গনরুমে রুপান্তর অথচ অন্যদিকে ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাস রংপুর মেডিকেল কলেজে ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তিন সিটের একটি রুম জবরদখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদল সভাপতি ডাঃ আল মামুনের বিরুদ্ধে।
শনিবার (২১ জুন) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ডাঃ আল মামুন বলেন, আমি রুম জবরদখল করি নাই।আমার বৈধ এলোটমেন্ট আছে।
এদিকে রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরেও কিভাবে প্রভাব খাটিয়ে একাই তিন সিটের একটি রুম দখল করে রেখেছে ছাত্রদল সভাপতি প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে হল সুপার ডাঃ জহরুল হক ও অধ্যক্ষ ডাঃ শরিফুল ইসলাম ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে দায়সারা বক্তব্য দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদল সভাপতি ডাঃ আল মামুন ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয় কর্তৃক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ৩২ জন ইন্টার্ণ চিকিৎসককে পিন্নু হোস্টেল থেকে ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের জন্য বরাদ্দকৃত ডাঃ মিলন হোস্টেলে সিট বরাদ্দ করে তিন কার্যদিবসের মধ্যে বরাদ্দকৃত রুমে উঠার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে ইন্টার্ণ হোস্টেল (ডাঃ মিলন) এর ৩০ নম্বর কক্ষে ছাত্রদল সভাপতি ডাঃ আল মামুন ও ডাঃ নাদিম মাহমুদ নিঝুমের জন্য সিট বরাদ্দ করা হয়।প্রশাসনের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পিন্নু হোস্টেলের তিন সিটের ৪৭ নম্বর কক্ষটি পুরোটাই প্রায় এক বছর থেকে দখল করে রেখেছেন ছাত্রদল সভাপতি ডাঃ আল মামুন।
সম্প্রতি রংপুর মেডিকেল কলেজের ৫৪ তম ব্যাচের অরিয়েন্টেশন এবং ক্লাস শুরু উপলক্ষে নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আসতে শুরু করায় সিটের সংকট দেখা যায়। এমতাবস্থায় কলেজ প্রশাসন জিয়া হোস্টেলের মটর সাইকেল রাখার গ্যারেজ রুমকে গণরুমে রুপান্তর করে সিটের ব্যবস্থা করে। অন্য দিকে দেখা যায়,রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে থাকলেও এবং বন্ধুরা সবাই ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষা জীবন শেষ করে চলে গেলেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ছাত্রদলের সভাপতি ডা আল মামুন ক্যাম্পাসে থেকে যায় এবং তার একার নামে দুটি রুমের বরাদ্দ রেখেছে প্রশাসন । যেখানে অন্য সাধারন ছাত্ররা ৩ জন করে আছে রুমে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রংপুর মেডিকেল কলেজের একজন শিক্ষার্থী জানায়,কিছু ছাত্রের ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরেও সিট দখল করে রেখেছে প্রশাসনের ছত্রছায়ায়। অথচ নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য যে রুম গুলাই সিট বরাদ্দ দিয়েছে কলেজ প্রশাসন সেখানে মানুষ থাকার উপযুক্ত নয়, এবং প্রতি ২৫-৩০ জনের জন্য একটা করে ওয়াশরুম। প্রথম সারির মেডিকেল কলেজের এরকম দুরবস্থা অনেক হতাশাজনক।
এবিষয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদল সভাপতি ডাঃ আল মামুন জানান, ইন্টার্ণ হোস্টেলে যাওয়ার নোটিশ হলে হোস্টেলে সিট ফাঁকা থাকায় আমি কলেজ অথরিটিকে জানাই আমার পড়াশোনার জন্য পিন্নু হোস্টেলেই পুরো রুমটা বরাদ্দ প্রয়োজন। পরবর্তীতে কলেজ অথরিটি আমাকে এলোটমেন্ট দেয়। এবিষয়ে আপনি কলেজ অথরিটিকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আমার ইন্টার্ণ শেষ হয়েছে গত বছরের আগস্ট মাসে। পরবর্তীতে চার মাসের জন্য এক্সটেনশন করে নেই।কিছুদিন আগে আমার ইন্টার্ণ শেষ হয়েছে। আমার পরের ৪৮ ব্যাচের ইন্টার্ণরাও এখনো এই হোস্টেলে আছে। কলেজ প্রশাসন নোটিশ দিলে আমি চলে যাবো।
রংপুর মেডিকেল কলেজের ইউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পিন্নু হোস্টেল সুপার ডাঃ জহরুল হক জানান, ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের পিন্নু হোস্টেলে থাকার সুযোগ নেই। শিক্ষাজীবন শেষের পরেও কিভাবে একাই তিন সিটের রুম দখল করে আছে প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ শরিফুল ইসলাম জানান, সব বিষয়তো আমার নজরে থাকে নাহ। এগুলো হল সুপারের বিষয়। রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে কিভাবে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তিন সিটের একটি রুম ছাত্রদল সভাপতি দখল করে আছে প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি ঢাকা আছি। এবিষয়ে আপনি হল সুপার ডাঃ জহরুল হকের সঙ্গে কথা বলুন। বলেই মুঠোফোনের কল কেটে দেন।
Leave a Reply