(মোঃ রাহাদ আলী সরকার – মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি প্রতিনিধি)
১৬মে,দুপুর ১টা ১৭ মিনিট।সমুদ্রের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠা কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ড্যাশ-৮৪০০ মডেলের উড়োজাহাজটি ঢাকার উদ্দেশ্য রওয়ানা হয়েছে।উড়োজাহাজটিতে রয়েছে শিশুসহ ৭১ জন যাত্রী।কক্সবাজারের মন জুড়ানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর নোনা পানির ঢেউ যেন তখনও তাদের শরীরে আঁচড়ে পড়ছে।তবে হঠাৎ ঘটে এক বিপত্তি,বিমানের বিজি ৪৩৬ ফ্লাইটটির একটি চাকা খুলে পড়ে যায় নিচে।
তখনও বৈমানিক তা জানতে পারেনি।কেননা পেছনের চাকা খুলে পড়লেও তা সেন্সরে ধরা পড়েনি।পরক্ষণেই কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে জানানো হয় চাকা খুলে যাওয়ার বিষয়টি।এরকম অবস্থায় বৈমানিকদের প্রয়োজন হয় দুরদর্শিতা ও দক্ষতা।
আনন্দ উদ্দীপনায় থাকা ফ্লাইটের যাত্রীরা তখনও জানেন না বিষয়টি।ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহ ও ফার্স্ট অফিসার জায়েদ তৎক্ষনাৎ তাদের অবস্থা জানায় ঢাকার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে।সে অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ প্রস্তুতি নিয়ে রাখে সবকিছুর।প্রস্তুত রাখা হয় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি,চিকিৎসার প্রস্তুতি,বিমানের কর্মীরাও প্রস্তুত থাকেন জরুরি উদ্ধারের জন্য।
চারদিকে তখন চিন্তার ভাজ,দেশের মানুষ তাকিয়ে ক্যাপ্টেনের দিকে,প্রার্থনায় মগ্ন সৃষ্টিকর্তার প্রতি।
তবে সব শংকা কাটিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ডানপাশে প্রেশার দিয়ে বিমানটিকে সফলভাবে অবতরণ করান পাইলট ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহ।কেননা বিমানের পিছনের বাম পাশের চাকাটি খুলে পড়ে গিয়েছিলো।
প্রায় ৮ হাজার ঘন্টা ফ্লাইং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহ যেমন দেখিয়ে দিলেন তার অসাধারণ দক্ষতা তেমনি শেখালেন বিপদগ্রস্ত অবস্থায় হতাশ না হয়ে কিভাবে সংকট কাটিয়ে উঠতে হয়।
তার এই অসাধারণ ল্যান্ডিং এর পর বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) রওশন কবীর বলেন,ফ্লাইটের পাইলট ক্যাপ্টেন বিল্লাহ ও তার ক্রুদের অসাধারণ দক্ষতা ও বিচক্ষণতায় ফ্লাইটটি ২ টা ২০ মিনিটে সফলভাবে অবতরণ করেছে।
এবিষয়ে বিমানের ক্যাপ্টেনরা বলছে,এ ধরনের ক্রিটিকাল মুহুর্তে বড় রকমের মানসিক চাপ নিয়ে বিমান অবতরণ করতে হয়।যদিও ট্রেনিংয়ের সময় সব শেখানো হয় তবে বাস্তবিক ক্ষেত্রে অনেক দক্ষতার সাথে কাজটি করতে হয় যা ক্যাপ্টেন করে দেখিয়েছেন।সত্যিকার বিপদে এমন ম্যানুয়াল অনুসরণ করে কাজ করতে পারাই ট্রেনিংয়ের সার্থকতা।
Leave a Reply