1. mtim30408@gmail.com : Khondokar Rakibul : Khondokar Rakibul
  2. admin@campus24.news : campus24news :
  3. khondokarrakibit5@gmail.com : Khandkar Rakibul Islam : Khondokar Rakibul Islam
  4. mdnajmulhasan8652@gmail.com : mdnajmulhasan hasan : mdnajmulhasan hasan
  5. mdriponsaharia@gmail.com : mdriponsaharia saharia : mdriponsaharia saharia
শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
IVSA HSTU এর উদ্যোগে “ফ্রী ভেটেরিনারি ক্যাম্পেইন” বিয়ের ফাঁদে ফেলে নারীকে নিঃস্ব করার অভিযোগ গোপালগঞ্জ ঘাটে ঘাঘট নদীতে ৯৬ মিটার ব্রিজ, খুলেছে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত হাবিপ্রবিতে রিসার্চ সোসাইটির গবেষণা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত  টাকা নিয়েও নবীন বরন হয় নি ববি’র ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের হাবিপ্রবিতে আইসি চিপ ডিজাইন শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত পূর্ণাঙ্গ সাইবার সিকিউরিটি সম্মেলন ‘JKKNIU CyberCon 2025’ রাস্তায় কাদা, স্বপ্নে বাধা — ডিমলার নিজপাড়া থেকে ঝাড়পাড়া পর্যন্ত প্রধান সড়ক সংস্কারের দাবি এলাকাবাসীর ডিমলায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা: ছয়জন গুরুতর আহত, রংপুর মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে পীরগাছায় জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী অন্নদানগর গরু-ছাগলের হাট

তিন সন্তানের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যায়ন, অসচ্ছল রাজা মিয়ার স্বপ্নযুদ্ধ

  • প্রকাশিত : শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৯ বার পাঠ করা হয়েছে

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: শরিফ মন্ডল

রংপুর, ২৫ এপ্রিল:

অভাব-অনটন যেন নিত্যসঙ্গী, দিন চলে অভ্যস্ত দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেই। সেই লড়াইয়ের মাঝেও সন্তানদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে এক পিতা যেভাবে আত্মত্যাগ করে যাচ্ছেন, তা সত্যিই অনুকরণীয়। পীরগাছা উপজেলার চৌধুরানী ইউনিয়নের দক্ষিণ মকসুদখাঁ গ্রামের দিনমজুর রাজা মিয়া নিজে হয়তো তেমন শিক্ষিত নন, কিন্তু সন্তানদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে সংগ্রাম করে চলেছেন।

 

রাজা মিয়ার পরিবারে রয়েছে পাঁচ সন্তান। এর মধ্যে বড় তিন ছেলে বর্তমানে দেশের তিনটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন। তাদের এ অর্জন গ্রামবাসীসহ গোটা এলাকার জন্য গর্বের হলেও, রাজা মিয়ার কাছে তা যেন এক যন্ত্রণার নাম। কারণ এই উচ্চশিক্ষার খরচ জোগানো তার মতো দরিদ্র একজন পিতার পক্ষে প্রায় অসম্ভব।

 

রাজা মিয়ার প্রথম সন্তান শামিম হোসেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। দ্বিতীয় সন্তান জামিল হোসেন ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়ন করছেন। আর তৃতীয় ছেলে সাইদুল ইসলাম সদ্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।

 

তিন ছেলের এমন সাফল্যের গল্প যেমন অসাধারণ, তেমনি তার পেছনের ত্যাগ-তিতিক্ষার কাহিনিও অনন্য। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি রাজা মিয়া শ্রম দেন কখনো কৃষিক্ষেতে, কখনো ইটভাটায়, কখনো অন্যের বাড়িতে মজুরি খেটে। সে আয়ে কোনোভাবে সংসার চলে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ—ভর্তি ফি, সেমিস্টার ফি, বাসা ভাড়া, খাবার খরচ, বই কেনা—এসব চালানো তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

 

রাজা মিয়া বলেন, “ছেলেদের মানুষ করতে চাই, শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে চাই, যাতে তারা ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে পারে। কিন্তু এত খরচ কেমনে চালাম! অনেক সময় খাবার কেনার টাকাও থাকে না, তখন চিন্তা করি ওদের পড়াশোনা কেমনে চলবে।”

 

তৃতীয় ছেলে সাইদুল ইসলাম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারা যেমন আনন্দের, তেমনি অনেক বড় একটা দায়। আমাদের পরিবারে এমন অবস্থা, বাবার সামান্য আয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব খরচ চালানো কোনোভাবেই সম্ভব না। সরকার বা সমাজ যদি পাশে দাঁড়ায়, তাহলে হয়তো আমরা এগিয়ে যেতে পারব।”

 

বড় দুই ভাইয়ের ক্ষেত্রেও একই বাস্তবতা। জামিল হোসেন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে নানা রকম সমস্যায় পড়ি। অনেক সময় টাকা না থাকায় প্রয়োজনীয় বই কিনতে পারি না। কেউ যদি সহায়তা করত, তাহলে আমরা আরও মনোযোগ দিয়ে পড়তে পারতাম।”

 

তিন ছেলের উচ্চশিক্ষার মাঝে আশার আলো দেখা গেলেও পরিবারটি এখনো সংগ্রামরত। রাজা মিয়ার আরও দুটি সন্তান রয়েছে। চতুর্থ ছেলে শাহজালাল স্থানীয় স্কুলে ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। আর সর্বকনিষ্ঠ সন্তান শাহপরান রাহুল, বয়স মাত্র ৪ বছর। এই পরিবারটি যেন জীবনের প্রতিটি ধাপে সংগ্রামের মধ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে।

 

স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন, রাজা মিয়ার সন্তানরা অত্যন্ত মেধাবী ও ভদ্র। তাদের সাফল্যে আমরা গর্বিত। এক প্রতিবেশী বলেন, “তিন ভাইয়ের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শুধু তাদের পরিবারের জন্য নয়, আমাদের গ্রামের জন্যও সম্মানের বিষয়। সমাজের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো।”

 

এই অসচ্ছল পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর এখনই সময়। স্থানীয় প্রশাসন, সমাজসেবামূলক সংস্থা কিংবা দেশের সামর্থ্যবান মানুষরা যদি এগিয়ে আসে, তাহলে রাজা মিয়ার সন্তানদের শিক্ষার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে পারে।

 

দেশে এমন হাজারো সম্ভাবনাময় তরুণ আছে, যারা দারিদ্র্যের কারণে প্রতিনিয়ত তাদের স্বপ্নকে বিসর্জন দিতে বাধ্য হয়। অথচ একটু সহানুভূতি, একটু সহায়তা পেলেই তারা হয়ে উঠতে পারে আগামী দিনের আলোকবর্তিকা। রাজা মিয়ার পরিবার তারই বাস্তব উদাহরণ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
©সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২৫  
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি