
হারুন-অর-রশিদ বাবু;
আন্দোলনের অপরপ্রান্তে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর অর্পিত কর্তব্য পালনে চরম অনিহাও হরহামেশাই দেখা যায়। তাঁরা সরকারকে বিব্রত অবস্থায় ফেলতে ও জাতিকে তিরস্কারের জন্য এধরনের অসত্য অপপ্রচার করছেন। সম্প্রতি দেখা গেছে মুরগী কিনে খাওয়া সামর্থ হীন শিক্ষকেরও আছে ৫ তলা বিশিষ্ট বাড়ি।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৭:০০ ঘটিকায় স্থানীয়দের দেয়া তথ্যমতে উপজেলার পরান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (কোড: ১০৫০৫০৬০৮) গিয়ে জাতীয় পতাকা উড়তে দেখা যায়। স্থানীয়রা জানান সারারাত এভাবেই পতাকা উড়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে বিদ্যালয়ের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে রাতেও নামানো হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার কথা থাকলেও শিক্ষকদের দায়িত্ব অবহেলায় রাতেও উড়েছে পতাকা।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয় অভিভাবক আব্দুল বারেক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই স্কুলের শিক্ষকরা এখন মাথার উকুন দেখা আর গল্প করার জন্য স্কুলে আসে। শিক্ষকদের অবহেলায় এখন বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী নাই বললেই চলে। জাতীয় পতাকার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তারা উদাসীনতাই প্রমাণ করে তাদের দায়িত্ববোধ।
স্থানীয় শিক্ষক সুমন পারভেজ বলেন, নিয়ম অনুযায়ী, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা যাবে। সন্ধ্যার আগেই পতাকা নামিয়ে ফেলতে হবে কিন্তু বিদ্যালয়টিতে শিক্ষকদের অবহেলায় রাতেও জাতীয় পতাকা নামানো হয়নি।
ওই বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী, সাবেক এসএমসির সদস্য ও চর তাম্বুলপুর দাখিল মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন, জাতীয় পতাকা আমাদের একটি গর্বের জিনিস, এটি আমাদের অস্তিত্ব এটি সঠিক সময়ে উত্তোলন এবং নামানো সবারই দায়িত্ব। রাতে জাতীয় পতাকা উড়ানো অবমাননার সামিল। তিনি আরো বলেন, এই বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতার কারণে শিক্ষার্থী শুন্যতার দিকে যাচ্ছে। মানসম্মত পাঠদান না করানোর কারণে নিকটতম অভিভাবকরাও তাঁদের সন্তানদের অনেক দুরের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দেন।
গণমাধ্যম কর্মীরা সকালে বিদ্যালয়ের পতাকা উড়ানোর ভিডিও ধারণ করতে গেলে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের স্বামী মমিনুল ইসলাম তারাহুরো করে পতাকাটি নামান এবং বলেন, গতকাল ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অফিসিয়াল কাজে পরিষদে গেছিলো, সেখান থেকে সন্ধার পর এসেছেন। সহকারী শিক্ষকরা পতাকা না নামালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কি করবে?
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরেফা বেগম বলেন, আমি যাকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম সে পতাকা নামাইছে। স্থানীয় ইউনুস মাষ্টার শত্রুতা বসত আমাকে বিপদে ফেলার জন্য সাংবাদিক ডাকছে। এখানকার অভিভাবকরা মুর্খ ওরা কিছু বোঝেনা ওদের কথা শোনবেন না। তিনি আরও বলেন ২০১৬ সাল থেকে এই স্কুলে আছি কেউ আমার দোষ বলতে পারবে না।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবুল হোসেন বলেন, পরান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পতাকা অবমাননার বিষয়ে শুনেছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মোঃ রাসেলকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমাকে ছবি পাঠিয়ে দেন আমি বিষয়টি দেখছি। পরে তাকে ছবি পাঠানো হলে, তিনি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।
Leave a Reply