কুড়িগ্রাম | জুন ১৩, ২০২৫:
দেশের প্রতিটি প্রান্তে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্র পর্যন্ত, ‘হারাম রিলেশনশিপ’ বা পরকীয়ার ভয়াবহতা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে। এই অনৈতিক সম্পর্কগুলো অসংখ্য মানুষকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলছে, তাদের ‘জীবন্ত লাশ’-এ পরিণত করছে এবং ক্ষেত্রবিশেষে আত্মহত্যার মতো মর্মান্তিক পরিণতি বেছে নিতে বাধ্য করছে। কুড়িগ্রামের বাসিন্দা শোয়াইব ইসলাম সম্প্রতি উত্তাল বাংলাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এই ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন এবং এর প্রতিকার চেয়েছেন।
শোয়াইব ইসলাম জানান, পরকীয়ার শিকার নারী-পুরুষেরা জীবিত থেকেও মৃতপ্রায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। সমাজের প্রতিটি স্তরে নারী-পুরুষের মধ্যে একে অপরকে ঠকানোর প্রবণতা বাড়ছে, যা শয়তানের প্ররোচনায় রাগ ও হিংসার জন্ম দিচ্ছে। এই বিষাক্ত সম্পর্কগুলো বিবাহবিচ্ছেদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়িয়ে দিচ্ছে, নারীর নগ্নতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং পুরুষরা তাদের যৌবন হারাচ্ছে।
শোয়াইব ইসলাম প্রশ্ন তুলেছেন, “তোমরা কি সেই সকল নারী-পুরুষকে শাস্তি দিতে চাও, যারা তোমাদেরকে জীবন্ত লাশে পরিণত করে দিয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে?”
তিনি সাংবাদিক এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে এই বিষয়টি জনসমক্ষে আনতে চান এবং যারা এই অন্যায় করছেন, তাদের শাস্তির বিষয়ে আলোচনা করতে চান।
তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, এই ‘হারাম রিলেশনশিপ’ই মানুষকে জীবন্ত লাশে পরিণত করছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ সমাজের সকল স্তরে এই অনৈতিকতার আগুন জ্বলছে। তাঁর মতে, নারী-পুরুষ উভয়েই একে অপরকে ঠকানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। এমনকি যারা নিজেদের সতীত্ব রক্ষা করতে চান, তারাও এই কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারছেন না।
যদি এখনই এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও প্রতিকার না করা হয়, তাহলে পুরো সমাজই একদিন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন। তিনি মনে করেন, শয়তানের ধোঁকায় পড়ে মানুষ নিজেরাই নিজেদের ওপর যে জুলুম করছে, তার একটি সমাধানের পথ খুঁজে বের করা অত্যন্ত জরুরি।
দেশের এই ক্রান্তিকালে, শোয়াইব ইসলাম বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে বলেছেন যে, তাদের পক্ষে অল্প সময়ে সকল মানুষের দুঃখ-কষ্ট দূর করা সম্ভব নয়। তবে বেঁচে থাকার জন্য যেটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই তিনি দেশের জনগণের কাছে প্রকাশ করতে চান, যাতে দেশের জান-মাল হেফাজত হয়।
তিনি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শে গড়া হযরত উমর (রা.)-এর মতো একজন শাসককে দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে দেখতে চেয়েছেন। তাঁর মতে, একজন বিচক্ষণ ও ন্যায়পরায়ণ শাসকই এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারেন এবং মানুষকে একটি সুন্দর ও নিরাপদ জীবন উপহার দিতে পারেন।
এই মানবিক আবেদন এবং কঠোর পদক্ষেপের দাবি নিয়ে দেশের গণমাধ্যম এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কতটা সক্রিয় হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
Leave a Reply