তা’মীরুল মিল্লাত প্রতিনিধি -মো:সাব্বির হোসাইন

টঙ্গী, গাজীপুরা: ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গীর গাজীপুরা ২৭ এলাকায় অবস্থিত স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যস্ত মহাসড়ক পার হচ্ছে। দেশের অন্যতম ব্যস্ত এই সড়কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ বিরাজ করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাদ্রাসার উভয় পাশ থেকে শিক্ষার্থীদের মূল সড়ক পার হয়ে ক্লাসে যেতে হচ্ছে। এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত দ্রুতগতিতে ভারী যানবাহনসহ অসংখ্য গাড়ি চলাচল করে। ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় ছোট থেকে বড়—সব বয়সী শিক্ষার্থী এবং পথচারীদের মাঝে এক ধরনের ভয় কাজ করছে। প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা, যা এই উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
মাদ্রাসার আলিম শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসিবুল ইসলাম জানান, “প্রতিদিন রাস্তা পার হতে খুব ভয় লাগে। অনেকবার একদম গা ঘেঁষে দ্রুতগতির গাড়ি চলে গেছে। একবার এক বন্ধুকে ধাক্কা দিয়েছিল, ভাগ্য ভালো ছিল বলে বড় কিছু হয়নি।” আরেক শিক্ষার্থী ফিরোজ মাহমুদ বলেন, “সকালে আর দুপুরে যখন ছুটি হয়, তখন রাস্তা পার হওয়া সবচেয়ে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। কখন যে গাড়ি এসে পড়ে, বোঝাই যায় না।”
কেবল শিক্ষার্থী নয়, অভিভাবকরাও এই পরিস্থিতিতে চরমভাবে উদ্বিগ্ন। শিক্ষার্থী রফিকের মা আক্ষেপ করে বলেন, “প্রতিদিন মনে ভয় নিয়ে ছেলেকে মাদ্রাসায় পাঠাই। মনে হয়, না জানি কবে কোন দুর্ঘটনা ঘটে যায়। সরকার কেন এখানে একটা ফুটওভার ব্রিজ দিচ্ছে না, সেটা ভাবতেই কষ্ট হয়।”
তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. হেফজুর রহমান জানান, “আমরা বহুবার লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনুরোধ জানিয়েছি। এত শিক্ষার্থী নিয়ে আমাদের প্রতিদিন দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। ইতোমধ্যে কয়েকটি দুঃখজনক দুর্ঘটনাও ঘটেছে। আমরা চাই, অবিলম্বে একটি নিরাপদ ও মানসম্পন্ন ফুটওভার ব্রিজ এখানে স্থাপন করা হোক।”
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দেশের অন্যতম ব্যস্ত সড়ক হওয়া সত্ত্বেও এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে হাজারো শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা উপেক্ষিত থাকা অত্যন্ত দুঃখজনক। সংশ্লিষ্ট দপ্তর, বিশেষ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এলাকাবাসীর জোর দাবি—অবিলম্বে তা’মীরুল মিল্লাত মাদ্রাসার সামনে একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক, যাতে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে সড়ক পারাপার হতে পারে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।