নিউজ ডেস্ক :
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বেলা পৌনে দুইটার সময় কুয়েট স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন। এদিকে আজ কুয়েটের দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ বলেন, শিক্ষার্থীরা আসলে ছোট মানুষ, তাই বিষয়টা তারা বুঝতে পারছে না। হল ও শিক্ষা কার্যক্রম একবার বন্ধ করলে পরবর্তী সময়ে খুলতে হলে একটু সময় লাগে। সিন্ডিকেট সভায় সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমি বলব তাদের সে সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া উচিত। তাদের টিউশনের বিষয়টা তো আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে নেই। এটার জন্য আমরা দুঃখিত। তবু আমাদের কিছু রুলসের মধ্যে থাকতে হয়।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের যদি কোনো দাবি জানায়, তাহলে আমি উপাচার্য হিসেবে সিন্ডিকেট সভায় তা উপস্থাপন করব। যত সিদ্ধান্ত সেখানেই নিতে হয়।
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নৃশংস হামলায় প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থী রক্তাক্ত হন। আমাদের ওপর গুলি চালানো হয়। এর প্রতিবাদে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা বিচারের দাবি করলে বিচারের নামে নাটক করে দুই মাস পর কুয়েটের ৪২ জন প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। এরপর গতকাল সোমবার সিন্ডিকেট সিদ্ধান্তেও বহিষ্কারের নামে নাটক করে প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদেরও বহিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এসব নাটক আর সহ্য করা হবে না। আমাদের ধৈর্যের সীমা পার হয়ে গেছে। আজ তিন দিন ধরে আমরা খোলা আকাশের নিচে মশার কামড় খেয়ে কষ্ট সহ্য করছি। তাই বাধ্য হয়ে হল গুলোর তালা ভাঙ্গছি’
এর আগে গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল রাতেও শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিন প্রশাসনিক ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে রাত্রি যাপন করেন।
প্রসঙ্গত, ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনায় প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করাসহ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য গঠিত কমিটি গত রোববার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নগরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোসেন আলী নামের এক ব্যক্তি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে মামলা করেন।
Leave a Reply