
টেকজায়ান্ট অ্যাপল মাত্রই একটি বিশেষ ক্লাবে যোগ দিয়েছে। কেননা এটি এখন বিশ্বের অন্যতম কয়েকটি পাবলিক কোম্পানির মধ্যে একটি, যারা ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজারমূল্য অতিক্রম করেছে।এর আগে, এ বছরের শুরুর দিকে অপর টেকজায়ান্ট এনভিডিয়া এবং মাইক্রোসফট এই মাইলফলকে পৌঁছায়।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার অ্যাপলের শেয়ারের দাম শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। সম্প্রতি শেয়ার বাজারে কোম্পানিটি তীব্রভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে বিপুল পরিমাণে আইফোন ১৭ বিক্রির কারণে— যার মধ্যে চীনে বিক্রিও উল্লেখযোগ্য, যেখানে এর আগে অ্যাপল প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যবসা করতে পারেনি।
এটি অ্যাপলের বছর শুরুর চিত্রের সম্পূর্ণ বিপরীত। তখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক, এআই পণ্যের উন্নয়নে বিলম্ব এবং দেশীয়ভাবে আইফোন উৎপাদনের চাপসহ নানা চ্যালেঞ্জের কারণে অ্যাপলের শেয়ার মূল্য পড়ে গিয়েছিল। গত এপ্রিলে শুধু এক দিনের লেনদেনে প্রতিষ্ঠানটি ৩১০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বাজারমূল্য হারিয়েছিল।
তবে সাম্প্রতিক উত্থান দেখাচ্ছে, এআই দৌড়ে পিছিয়ে থাকলেও, শুধু আইফোনই এখনো ভোক্তা ও ওয়াল স্ট্রিট— দুই পক্ষকেই উচ্ছ্বসিত রাখতে যথেষ্ট। তবুও অ্যাপলের শেয়ারের দাম এ বছর এখন পর্যন্ত মাত্র ৭ শতাংশ বেড়েছে— যা ২০২৪ সালে ৩০ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধির তুলনায় অনেক কম এবং সামগ্রিক বাজারের ১৭ শতাংশ বৃদ্ধির থেকেও কম।অ্যাপলের এই নতুন রেকর্ড এসেছে এমন এক বছরে, যখন এআই–কেন্দ্রিক উদ্ভাবন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠাগুলোকে নতুন উচ্চতায় তুলে এনেছে।এনভিডিয়া— যা এআই চিপের প্রধান সরবরাহকারী এবং মাইক্রোসফট— যা ক্লাউড সেবার বড় খেলোয়াড়, অ্যাপলের আগে ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের মূল্যমান ছুঁয়ে ফেলেছে। এটি দেখায় যে, ওয়াল স্ট্রিটে এখন এআই কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অথচ ঐতিহাসিকভাবে রেকর্ড-ব্রেকিং বাজারমূল্য ছিল অ্যাপলের অধিকারে।
২০১৮ সালের আগস্টে অ্যাপল প্রথম কোম্পানি হিসেবে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের মূল্যমান অর্জন করে। ২০২০ সালের আগস্টে ২ ট্রিলিয়ন, আর ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ৩ ট্রিলিয়ন— যদিও সে স্তরে স্থায়ীভাবে পৌঁছাতে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময় লাগে।
ওয়াল স্ট্রিট এমন প্রযুক্তি থেকে লাভ তুলতে উদগ্রীব, যা অনেক বিশেষজ্ঞের মতে স্মার্টফোন বা ইন্টারনেটের মতোই ভিত্তিগত পরিবর্তন আনতে পারে। এআই এখন অফিসের কাজ থেকে স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষাক্ষেত্র পর্যন্ত সর্বত্র আরও বড় ভূমিকা নিচ্ছে।
তবে আপাতত আইফোনই অ্যাপলকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।
ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক ড্যান আইভস ২০ অক্টোবরের এক নোটে লিখেছেন, ‘আমাদের কাছে এটা স্পষ্ট যে, (সিইও টিম) কুক এবং তার দল আইফোন ১৭–এর মাধ্যমে অবশেষে সাফল্য পেয়েছেন এবং এখন ওয়াল স্ট্রিট অপেক্ষা করছে অ্যাপলের বৃহৎ কৌশলগত এআই পরিকল্পনা ঘোষণার জন্য।’
Leave a Reply