ক্যাম্পাস ২৪ প্রতিবেদক
বাগেরহাটের মোংলা পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মারধর ও ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। মোংলা পৌর যুবদলের সদস্য সচিব এমএ কাশেমের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ বিএনপির।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে ও দুপুরে এসব ঘটনা ঘটে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, মোংলা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬টি ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কমিটি গঠন হয়েছে। পূর্ব নির্ধারিত সময় শনিবার ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পৌরসভার ১, ২ ও ৬ নং ওয়ার্ডের কমিটি গঠন করার জন্য ভোটগ্রহণ হয়। এর মধ্যে ২ নং ওয়ার্ডের ভোটগ্রহণ হয়েছে শহরের ইসলামী আদর্শ একাডেমিতে। সকালে ভোট চলাকালে যুবদলের নেতাকর্মীরা ওই ওয়ার্ডের সভাপতি প্রার্থী কামালের ওপর হামলা করে। তাদের হামলায় কামাল ও তার ছেলে মুক্তাদিরসহ ৪ জন আহত হন। আহতদের মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ২নং ওয়ার্ডে আহত কামালের পদে নির্বাচিত হয়েচেন দিদারুল আলম দিদার।
এদিকে ৬নং ওয়ার্ডের ভোট হয়েছে শহরের কবরস্থান রোডের দিগন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। দুপুর দেড়টার দিকে পৌর যুবদলের সদস্য সচিব এমএ কাশেমের নেতৃত্বে এই ওয়ার্ডের ব্যালট বাক্স ছিনতাই করা হয়। এ সময়, যুবদল নেতা মঞ্জু, কামরুল, মাছুম, শামিম, বাবু, ছগির, ইউনুচ, সোহেল, হোসাইন মোল্লা, হাসান মেহেদী ও সেলিম রেজা এমএ কাশেমের সঙ্গে ছিলেন। এ ঘটনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। ৬নং ওয়ার্ডের ভোট সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।
এ ব্যাপারে মোংলা পৌর যুবদলের সদস্য সচিব এম এ কাশেম এর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর যুবদলের সভাপতি মাহমুদ রিয়াদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যারা দলে ছিল না এবং আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে কাজ করেছে, তাদের দিয়ে কমিটি করা হচ্ছিল। তাই যুবদলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা ভোট বন্ধ করার অনুরোধ করেছিল। কিন্তু নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য না শুনে নির্বাচন চালিয়ে গেছেন। এজন্য আমাদের কর্মীরা এটা করেছে।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সৈয়দ নাছির আহম্মেদ মালেক বলেন, কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই যুবদলের কিছু নেতাকর্মী তাদের পছন্দের লোকদের দিয়ে কমিটি করার জন্য ঝামেলা করছিল। পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছিল। দুপুর দেড়টার দিকে পৌর যুবদলের সদস্য সচিব এমএ কাশেম লোকজন নিয়ে ১০-১২টি মোটরসাইকেল ভোট কেন্দ্রে আসে। একপর্যায়ে তারা ৬ নং ওয়ার্ডের ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ততক্ষণে প্রায় ৮০ শতাংশ ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আপতত ৬ নং ওয়ার্ডের ভোট স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে তফসিল ঘোষণা করে এই ওয়ার্ডের কমিটি গঠনে নির্বাচন দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি আমরা বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি ও খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদককে জানিয়েছি। যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হবে। এমএ কাশেমসহ ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম গোরা বলেন, যারা এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে দলীয় ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply