
খাদিজাতুল কুবরা বলছেন, জিএস অথবা এজিএস পদে প্রার্থী হতে চান তিনি। তবে কোন প্যানেল থেকে প্রার্থী হবেন, সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। খুব শিগগিরই বিষয়টি জানাবেন।
ছাত্রদলের প্যানেল থেকে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে খাদিজা বলেন, ‘ছাত্রদল যদি ইনক্লুসিভ এবং লিবারেল একটা প্যানেল দেয়, তাদের এজেন্ডার সঙ্গে আমার এজেন্ডা যদি মিলে যায়, তারা যদি দলীয়করণে গুরুত্ব না দিয়ে নেতৃত্বকে গুরুত্ব দেয়, তাহলে আমার ছাত্রদলের সঙ্গে যেতে কোনো সমস্যা নেই। আবার এমনও হতে পারে, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করব।’
খাদিজাতুল কুবরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। ২০২০ সালের অক্টোবরে অনলাইনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য প্রচার ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়। এ মামলায় তিনি প্রায় ১৫ মাস কারাগারে ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘অনেকে ছাত্রদলের সাম্প্রতিক প্রোগ্রামগুলোয় আমাকে দেখে ধারণা করছে, আমি ছাত্রদলের প্যানেলে যাব। আমি সবার প্রোগ্রামে যাই। শিবির, আপ বাংলাদেশ কিংবা অন্যান্য সংগঠন ডাকলেও আমি তাদের প্রোগ্রামের অংশ নিয়েছি। আমি লিবারেল মাইন্ডের, আমি সব জায়গাতেই যাই।’
খাদিজাতুল কুবরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। ২০২০ সালের অক্টোবরে অনলাইনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য প্রচার ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়। এ মামলায় তিনি প্রায় ১৫ মাস কারাগারে ছিলেন।
নিজের নির্বাচনী ইশতেহার প্রসঙ্গে খাদিজা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত শেষ করা, মেডিকেল সেবার উন্নয়ন করা, বাইরের মেডিকেল সেবায় শিক্ষার্থীদের জন্য সাধ্যের মধ্যে আনা- এসব বিষয়ে আমি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন, ক্যান্টিন ও ছাত্রী হলে খাবারের মান উন্নয়ন এবং ক্যাম্পাসে হয়রানিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা আমার অগ্রাধিকার।’
‘বিশেষভাবে আমার মূল লক্ষ্য হচ্ছে, বেশিরভাগ শিক্ষার্থী মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত। তারা পিছিয়ে পড়েছে। আমি তাদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে বিশেষভাবে কাজ করতে চাই’, যোগ করেন তিনি।
অনেক শিক্ষার্থী টিউশনি করাতে গিয়ে হয়রানির মুখে পড়ে জানিয়ে খাদিজা বলেন, ‘আমি চাই, তারা যেন আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে উপার্জন করতে পারে। এমন কিছু সুযোগ তৈরি করা, যাতে নারী শিক্ষার্থীরা দক্ষতা উন্নয়ন করতে পারে এবং ঘরে বসেই উপার্জন করতে পারে। পাশাপাশি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন প্রাইভেট হাসপাতালে স্বল্প খরচে চিকিৎসাসেবা পায়, সে জন্যও কাজ করব।’
খাদিজা বলেন, ‘একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও আমরা অনেক বৈষম্যের শিকার হই। যথাযথ বরাদ্দ পাই না। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আমরা অনেক দিক থেকে পিছিয়ে আছি। আমি সমস্যাগুলো শনাক্ত করে সমাধান করতে চাই। কিন্তু এ কাজগুলো আমি একা করতে পারব না। এক্ষেত্রে ছাত্র সংসদ আমার জন্য সহায়ক হবে।’
কারাগারে থাকার অভিজ্ঞতার নিয়ে খাদিজা বলেন, ‘আমি একজন মজলুম। আমি দায়িত্ব পেলে কখনও কারও ওপর জুলুম করব না। অন্যায় কাজ করার আগে ১০০ বার ভাবব। আমি নিজে বিনা বিচারে দীর্ঘ ১৫ মাস কারাভোগ করেছি। তাই চাই না, আমার কোনো শিক্ষার্থী ভাই-বোন অন্যায়ভাবে হয়রানির শিকার হোক। শিক্ষার্থীদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমি কাজ করব।’
নারী নেতৃত্বের সংকট নিরসন নিয়ে খাদিজা বলেন, ‘আমার জকসুতে আসার অন্যতম কারণ এটি। আমি গত এক বছর সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেছি। কোনো দলে যাইনি, তেমন চোখে পড়ার মতো একটিভিটি ছিল না। রাজনীতিতে নারীরা সবসময় পেছনে থাকে।’
তিনি বলেন, ‘যখন আন্দোলন করতে হয়, তখন আমরা সামনে। আর যখন পদ-পদবির প্রশ্ন আসে, তখন আমরা পেছনে। আমি চাই নারীদের জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে, যেখানে তারা সম্মানিত ও নিরাপদ বোধ করবে। আমি তাদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছেলেরাই শুধু ভিপি, জিএস কিংবা এজিএস হন, আর নারীরা থাকেন পেছনে। তাই আমি সম্পাদকীয় পোস্টে নির্বাচন করতে চাই না। জিএস কিংবা এজিএস পদে নির্বাচন করব।’
Leave a Reply