মোঃআশিকুল ইসলাম
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) এখনো পূর্ণতা পায়নি।প্রতিষ্ঠাকালীন পর থেকে অবকাঠামোর উন্নয়নের মুখ দেখেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। আবাসন সংকট, শ্রেণিকক্ষের সংকট, শিক্ষকের সংকট, ল্যাব ও গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের সংকট, যা এখন সংকটময় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকটের ফলে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ভাড়া বাসায় থাকতে বাধ্য হচ্ছে। আর এ সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে স্থানীয় বাসার মালিকরা। শিক্ষার্থীরা বাসা ভাড়া নিতে চাইলে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করেন বাসার মালিকরা । অন্যদিকে আবাসন সংকটের ফলে শিক্ষার্থীরা উচ্চ ভাড়ায় বাসা নিতে বাধ্য হন।
এদিকে বরিশাল শহরে প্রতি ফ্ল্যাট ভাড়া গড়ে ৫ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকার ভিতরে হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের এরিয়াতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭-৯ হাজারে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এরিয়াতে অধিকাংশ বাসার মালিকরা এক কক্ষ বিশিষ্ট একটি রুমের ভাড়া ৪-৫ হাজার টাকা দাবি করেন। তাতে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, " আবাসন সংকটের ফলে বেশি টাকা ভাড়া দিয়ে বাহিরে বাসা ভাড়া নিতে হয়। এতে আমাদের জীবন যাত্রা মান বেড়ে যায়। যা আমাদের জন্য খুবই ব্যয় বহুল। অনেকেই যা বহন করতে সক্ষম নয়। যদি বরিশালের বাসার মালিকরা এই ব্যাপারে সহনশীলতা দেখাতো, তাহলে শিক্ষার্থীর ব্যয় কিছু কমে আসতো।"
বর্তমানে ১০ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই হাজারের চেয়ে কম শিক্ষার্থী থাকতে পারছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি হলে। বাকি শিক্ষার্থীদের বাইরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে।
তবে হলগুলোর ধারণ ক্ষমতার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থী রাখার অভিযোগও রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধে।ছাত্রদের পাঁচতলাবিশিষ্ট দুটি হলের প্রতি কক্ষে ৮জন করে এবং এক শয্যায় দুজন করে শিক্ষার্থী থাকেন। যা নিয়ে তারা প্রায় সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অন্যদিকে ছাত্রীদের জন্য পাঁচতলা ও ছয় তলাবিশিষ্ট দুটি হল রয়েছে। যা তাদের জন্য পর্যাপ্ত নয়।
সম্প্রতি শেরে বাংলা হলের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো.আরিফুল রহমান অনিক হল ছেড়ে বাহিরে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। তবে সে দীর্ঘ এক মাস বাসা খুঁজেও একটি বাসার মালিক শিক্ষার্থী বান্ধব পাননি। এই বিষয় তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন," আমি এই মাসে হল ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেজন্য ক্যাম্পাস এরিয়াতে বাসা খুঁজতে যাই। কিন্তু বাসার মালিকদের উচ্চ ভাড়া জন্য আমি এখনো বাসা ভাড়া নিতে পারিনি।"
হল ছাড়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন," আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের হলের খুবই করুণ অবস্থা। হলে এক রুমে ৮জন করে থাকে। তার থেকে ও বড় সমস্যা হল এক বেডে দুইজন করে থাকা লাগে। যা আমার কাছে অস্বস্তিদায়ক। এবং রুমে প্রয়োজনের চেয়েও অতিরিক্ত শিক্ষার্থী থাকায় পড়াশোনার করতে সমস্যা হয়।"