ইবি প্রতিনিধি
অনুষদ ভিত্তিক ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারী স্নাতকোত্তর ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের ৩৫ জন শিক্ষার্থীকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (২৪ মে) বেলা ১২টায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে (টি এস সি সি) পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে ডিনস্ এওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান শুরু হয়। এসময় কৃর্তি শিক্ষার্থীদের ডিন'স অ্যাওয়ার্ড পদক, সনদ ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে ডিনস্ কমিটির সম্মানিত সভাপতি প্রফেসর ড. আ.ন.য ছিদ্দিকুর রহামন আশ্রাফীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. এয়াকুব আলী, মাননীয় ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সম্মানিত ডীন মহোদয়গন, সম্মানিত রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোঃ মনজুরুল হকসহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বৃন্দ।
অনুষ্ঠানে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, "মেধাবীরাই পৃথিবী বদলেছে, মেধাবীরাই বাংলাদেশ বদলাবে। মেধাবীরা সমাজের অগ্রগামী শক্তি। তাদের জ্ঞান, চিন্তাশক্তি ও উদ্ভাবনী দক্ষতা সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এই মেধাবীরা যাতে আশাহত না হয় সেজন্য তাদেরকে যোগ্য সম্মান দিয়ে উৎসাহিত করতে হবে। "
তিনি মেধাবী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, "এই মেধার হিসাব প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই আজকের পরিবর্তিত বাংলাদেশ। মেধাবীদের সুযোগ করে দিতেই সেদিন সংগ্রামের সূচনা হয়েছিল। সে সংগ্রাম দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছড়িয়ে গিয়ে পরিণত হয়েছিল সাধারণ জনতার অভ্যূত্থানে। যেখানে প্রায় দুই হাজার মানুষ শহীদ হন।"
তিনি আরো বলেন, "মেধাবীদেরকে সেই আন্দোলনকে, সেই প্রাণ বিসর্জনকে সম্মান জানাতে হবে। ভূলে যাওয়া যাবেই না। তিনি মনে করেন, দেশ গঠনে, একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনে যথাযথ ভূমিকা পালন করে স্বার্থক, উন্নত দেশ গঠনে ব্রতী হয়েই তোমাদের এই সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।"
অনুষ্ঠানে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. এয়াকুব আলী তাঁর বক্তব্যে বলেন, "যে অবস্থায় পূর্বে এ দেশ ছিল সেখানে মেধার মূল্যায়ন তো অনেক দুরে, এই মেধাবী শব্দটিই আমরা ভুলতে বসেছিলাম। সেখান থেকে দেশ আজ উঠে এসেছে। মাঝখানে হারিয়ে গেছে অসংখ্য তাজা প্রাণ।"
তিনি আরো বলেন, "সেই ঝরে যাওয়া প্রাণের বিনিময়ে তোমাদের এই মেধার মূল্যায়ন করা হচ্ছে। তোমাদের অঙ্গীকার করতে হবে। দেশের জন্য যারা প্রাণ দিয়েছে, সেই দেশের উন্নয়নে তোমরা কাজ করে যাবে। তোমাদের মতো মেধাবীদেরকেই সমাজের অন্যায়, বৈষম্য ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করতে হবে।"
ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, "একটি জাতির উন্নয়ন নির্ভর করে সে দেশের মেধাবী মানুষদের যথাযথ ভুমিকার উপর। তিনি বলেন মেধাবীদের এই ভূমিকা বিভিন্নভাবে প্রতিফলিত হয়।
তার মতে, মেধাবীরা নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করে এবং গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে তারা সমাজের সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধান বের করে।"
তিনি আরো বলেন, "দেশে নীতি-নির্ধারক, শিক্ষক, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, চিকিৎসক প্রভৃতি ক্ষেত্রে মেধাবী তৈরি করছি আমরা। "
প্রসঙ্গত, ডিনস অ্যাওয়ার্ড হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক বা গবেষণায় অসাধারণ সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে প্রদত্ত একটি সম্মাননা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ বা বিভাগে যারা শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জন করেন, তাদেরকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এটি শিক্ষার্থীদের মেধা, পরিশ্রম ও একাডেমিক উৎকর্ষতার প্রতিফলন হিসেবে বিবেচিত হয়। এর আগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২৪ সালের ১০ মার্চ প্রথমবারের মতো ৮টি অনুষদের ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।