তাসনীম সিদ্দিকা,বাকৃবি:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) 'কৃষি যান্ত্রিকীকরণে বারি উদ্ভাবিত কৃষি যন্ত্রপাতির অবদান শীর্ষক সেমিনার' শীর্ষক সেমিনার ও প্রদর্শনী মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) আয়োজন বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল সম্মেলন কক্ষে ওই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
একই সাথে সম্মেলন কক্ষের বাইরের প্রাঙ্গণে বারি উদ্ভাবিত কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী চলতে থাকে। প্রদর্শনীতে বারির উদ্ভাবিত বীজ বপন ও ফসল সংগ্রহকারী বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতির সুবিধা-অসুবিধা আলোচনা করা হয়।
প্রদর্শনীর পর মিলনায়তনের ভেতরে অনুষ্ঠিত হয় আইডিয়া প্রদান প্রতিযোগিতা ও সেমিনার। প্রতিযোগিতায় কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীরা একক ও দলগতভাবে পোস্টার উপস্থাপনের মাধ্যমে আধুনিক কৃষি যন্ত্র ও প্রযুক্তির ধারণা দেন। ২৩ টি আইডিয়ার মধ্যে ১৫টি আইডিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। সেই পোস্টার ও প্রেজেন্টেশনের মধ্য থেকে ৩জনকে পুরষ্কৃত করা হয়েছে।
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্য বৈজ্ঞানিক ধারণা প্রবন্ধ উপস্থাপন ও কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। পরে প্রবন্ধ উপস্থাপনা থেকে ৩ টি দল ও কুইজ প্রতিযোগিতায় ২ জন বিজয়ীকে পুরস্কৃত করা হয়।
সেমিনারে বারি উদ্ভাবিত ৭১ ধরনের যন্ত্রপাতির নাম, ব্যবহারের সুবিধাসহ নানান বিষয় নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বারির উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অধ্যাপক ড মো এরশাদুল হক। যার মধ্যে ৫৫ যন্ত্রপাতি আবিষ্কার শেষ হয়েছে এবং ১৬টি যন্ত্রপাতির গবেষণা চলমান রয়েছে।
বারির ফার্ম মেশিনারি এন্ড পোস্টহারভেস্ট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অর্থায়নে 'কৃষি যন্ত্রপাতি ও লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন ব্যবস্থাকে অধিকতর লাভজনক করা' প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাকৃবির কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্ত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাউরেস পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাম্মাদুর রহমান এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ হোসেন। এছাড়াও কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনার প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাউরেস পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাম্মাদুর রহমান বলেন,
"আমাদের দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হলেন কৃষকরা। তাঁদেরকে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের আওতায় আনলে দেশের সামগ্রিক উন্নতি নিশ্চিত হবে। এই যন্ত্রগুলো এমন হওয়া উচিত যেন ব্যবহারকারী-বান্ধব হয়।
তিনি আরও বলেন,"বাকৃবির কৃষি প্রকৌশল অনুষদের বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন, যা আমাদের গর্বের বিষয়। কিন্তু এই অগ্রযাত্রা টিকিয়ে রাখতে এবং জাতীয়ভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে যেতে হলে সরকারিভাবে গবেষণা খাতে আরও বেশি বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি গবেষণার সঙ্গে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিবেদিতভাবে কাজ করছেন, তাদের মেধা ও পরিশ্রম যেন সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পায়, সেটি এখন সময়ের দাবি।"