ইবি প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাস সংলগ্ন একটি মেসে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তবে এই ঘটনাকে অপপ্রচার দাবি করেছেন মেস পরিচালকসহ মেসের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা।
সোমবার এ ঘটনার ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ পত্র দেন। ভুক্তভোগী হলেন বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অলিক কুমার শিকদার।
অভিযোগ পত্রে বলা হয়, গত শনিবার ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী হোয়াইট হাউজ মেসে রাত ৯টায় মেসের সিট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আইসিটি বিভাগের সোলাইমান ৩০২ নং রুমে আমাকে ডেকে পাঠায়। উক্ত রুমে আইসিটি বিভাগের সোলাইমান, তালাস এবং সমাজকল্যাণ বিভাগের রোমানসহ অজ্ঞাত প্রায় ৭-৮ জন ব্যক্তি উপস্থিত ছিল। নানা বিষয়ে মতবিরোধের জের ধরে তারা আমার উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে তারা আমাকে মেস থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়। আমি অসুস্থবোধ করলে তারা রাগান্বিত হয়ে আমাকে রুম থেকে বের করে দেয়।
অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারনে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি এবং জ্ঞান ফেরার পর দেখি আমি ইবি চিকিৎসা কেন্দ্রে। এরপর চিকিৎসা গ্রহণ শেষে কিছুটা সুস্থবোধ করলে রুমে ফিরে আসি। পরের দিন রবিবার সকালে পুনরায় অসুস্থতাবোধ করলে আবারো জ্ঞান হারাই। জ্ঞান ফেরার পর আমি নিজেকে ইবি চিকিৎসা কেন্দ্রে দেখতে পাই এবং অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে আমাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বর্তমানে আমি কিছুটা সুস্থতাবোধ করছি।
আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনায় আমি আতঙ্কিত এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কারণে চলমান ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছি না।
এ বিষয়ে আইসিটি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইকবাল হোসেন বলেন, “সিট নিয়ে কিছুটা তর্কাতর্কি হয়েছিল। ভুক্তভোগী অভিযোগ করছে, তাকে হলে যেতে বাধ্য করেছে আইসিটি বিভাগের একটি সিন্ডিকেট যা আসলে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে বলা। মেডিকেলে গিয়ে সে জানায়, প্রথম বর্ষে র্যাগিংয়ের পর থেকেই মাঝে মাঝে প্যানিক অ্যাটাক হতো। বিষয়টি আমরা আগে জানতাম না, ডাক্তারই প্রথম জানায়। ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া’ নামের একটি ফেসবুক পেইজে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ঘটনাটি ভাইরাল করা হয়েছে। আমরা ওই পেইজের বিরুদ্ধে মামলা করব। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে।”
ছাত্রাবাসের পরিচালক আইসিটি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সোলাইমান হোসেন বলেন, "ভুক্তভোগী সিট নিয়ে বৈষম্য হচ্ছে বলে অভিযোগ করলে তাকে ডেকে সমাধান করার চেষ্টা করছিলাম। তখন উভয়পক্ষের মধ্যে কিছুটা তর্কাতর্কির সৃষ্টি হয়। তাকে রুমে পাঠিয়ে দিলাম। পরে শুনেছি প্যানিক অ্যাটাক হয়েছে। মেসের সিট নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রোশে এমনটা প্রচারণা চালাচ্ছে।"
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান জানান, বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। এ বিষয়ে প্রক্টরিয়াল বডি বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।