শাহরিয়ার স্বর্ণব, হাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুম সংকট ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে সকল ধরনের ক্লাস ও ফাইনাল এক্সাম বর্জন করেছে।
আজ ১৮ মে (রবিবার) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দশতলা ভবন(ডঃ মোহাম্মদ কুদরাত-এ-খুদা ভবন) এর সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য,বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির ক্লাসরুম ও ল্যাব সংকট নিরসনের লক্ষ্যে সম্প্রতি নির্মাণ করে একটি দশতলা ভবন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ক্লাসরুম ও ল্যাবরেটরি বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ভবনের চতুর্থ তলার দুটি কক্ষ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
তবে অভিযোগ রয়েছে, ভবনের চতুর্থ তলা মূলত আর্কিটেকচার বিভাগের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল। এই দাবিকে কেন্দ্র করে আর্কিটেকচার বিভাগের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন এবং তাদের দাবি অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ সেই ফ্লোরটি আর্কিটেকচার বিভাগের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে দিয়ে দেয়। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে কিছুই জানানো হয়নি, এমনকি বিকল্প কোনো কক্ষও বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
ফলস্বরূপ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে ক্লাসরুমবিহীন অবস্থায় রয়েছে।ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ফলে শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে নানা রকম বিরম্বনায়। শিক্ষার্থীদের মতে, এটি শুধু অস্বস্তিকর নয়, বরং একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ও শিক্ষার পরিবেশের চরম অবনতি নির্দেশ করে।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন করছি না। আমাদের একটাই দাবি—সুষ্ঠু ও সম্মানজনকভাবে ক্লাস করার সুযোগ নিশ্চিত করা হোক"।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের ৪ দফা দাবিসমূহ হলোঃ
১. অবিলম্বে চলতি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংশোধন করে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে একাধিক প্রফেসর নিয়োগসহ শিক্ষক-ছাত্র ১ঃ১৫ অনুপাতে মোট শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
২. ক্লাস ও ল্যাবের সংকট দূর করতে অন্তত ৪টি ক্লাসরুম এবং কমপক্ষে ৭টি ল্যাব (কম্পিউটার, ড্রয়িং, স্ট্রাকচারাল, জিওটেকনিক্যাল, ট্রান্সপোর্টেশন, এনভায়রনমেন্টাল, ওয়াটার রিসোর্সেস) বরাদ্দ দিতে হবে।
৩. প্রত্যেকটি ল্যাবরেটরির জন্য পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি সরবরাহ এবং দক্ষ ১ জন করে ল্যাব টেকনিশিয়ান নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
৪. আমাদের প্রকৌশলী পরিচয় নিশ্চিত করতে Institution of Engineers, Bangladesh (IEB) এর স্বীকৃতি অবিলম্বে নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তবে জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষ ভেতরে আলোচনায় বসেছে।