নুসরাত নাঈম সাজিয়া রাজশাহী কলেজ প্রতিনিধি
রাজশাহী কলেজের বাংলা বিভাগের স্নাতক ৩য় বর্ষের ক্লাস চলাকালীন মেয়েদের উত্ত্যক্তের অভিযোগে বহিরাগত শ্রী কৃষ্ণ কুমার ঘোষ নামে এক যুবককে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
শনিবার ( ১৭ মে) দুপুর ২টায় রাজশাহী কলেজের বাংলা বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেন।
আটককৃত যুবক হলেন শ্রী কৃষ্ণ কুমার ঘোষ। পিতা শ্রী শঙ্খ কুমার ঘোষ ও মাতা শ্রীমতী চন্দনা কুমার ঘোষ।তিনি রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী নন, লেখাপড়া করেছেন ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
শিক্ষার্থীরা জানান, ক্লাসে শুরু থেকেই তার পোশাক এবং কাছে কোনো বইখাতা না দেখে সন্দেহজনক মনে হয়। ক্লাসে ঢুকে সে মেয়েদের বিভিন্ন ভাবে পরিচয় জিজ্ঞেস করে এবং নাম প্রেজেন্টর সময় কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থী ছেলেদের কাছে তার পরিচয় জিজ্ঞেস করেন।
ক্লাসের ছেলেরা তাকে চিনতে না পেরে সন্দেহজনক মনে হলে তার রোল জিজ্ঞেস করলে সে প্রথমবার ৮৪ পরে ১৮৪ রোল বলে। কিন্তু সেই সময় ১৮৪ রোলের শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন।
এরপর ক্লাস শেষে সবাই যখন বাহিরে আছে কয়েকজন শিক্ষার্থী লক্ষ্য করেন, সেই সন্দেহজনক ব্যক্তি আগবাড়িয়ে মেয়েদের সাথে কথা বলছে তবে মেয়েদের জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান তারা তাকে চেনেন না। এছাড়াও ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে তার কাছে জানতে চাইলে সে কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারেনি।
এছাড়াও সে স্বীকারোক্তি দেয়, সে কলেজ দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন সময় আসতো এবং একেক দিন একেক বিভাগে ক্লাস করতো। বাংলা বিভাগের একজন শিক্ষার্থী বলেন, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ রয়েছে এমনি তার একজন বান্ধবী মনোবিজ্ঞান বিভাগে পড়ে তাকেও নাকি সে এক দিন ক্যাম্পাসে উত্ত্যক্ত করেছে।
পরবর্তীতে বাংলা বিভাগের শিক্ষকদের নিকট শিক্ষার্থীরা তাকে নিয়ে গেলে তার আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় বিভাগের পক্ষে থেকে পুলিশকে জানানো হয়।
পুলিশ এসে সাময়িকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন রাজশাহী কলেজের সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষের দুঃসম্পর্কের খালাতো ভাই। এছাড়াও তার ফোনের কল লিস্টে জুলাই অভ্যুত্থানের আন্দোলনের সময় ২৩ জুলাই রকি কুমার ঘোষের সাথে কথা প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ কে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ রকিবুল হাসান ইবনে রহমান কে ফোন করা হলে তিনি জানান, যাকে আটক করা হয়েছে সে কলেজে ঘুরতে এসেছিল। এছাড়াও সে নাকি রাজশাহী কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রকি কুমার ঘোষের দুঃসম্পর্কের আত্মীয়।
তিনি বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে বাদী হয়ে ইভটিজিং এর মামলা করেছে। তাকে আদালতে চালান করা হবে।