হারুন-অর-রশিদ বাবু; রংপুর
রংপুরে পতিতাবৃত্তির মাধ্যমে গ্রামের শৃংঙ্খলা নষ্টের অভিযোগে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস রংপুর জেলা প্রশাসক ও মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের।
রংপুর মেট্রোপলিটন মাহিগঞ্জ থানাধীন পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের হরতিকীরতল নামক এলাকায় একাধীক স্বামী
পরিত্যক্ত বিলকিস বেগম, (৩৫) ও তার কন্যা মিলে বিগত ৭ বছর যাবত পতিতাবৃত্তির পাশাপাশি রমরমা মাদক ব্যবসা করে আসছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
গত ২০ এপ্রিল ২০২৫ইং রংপুর জেলা প্রশাসক ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর গণস্বাক্ষরসহ লিখিত অভিযোগ দিয়েছে স্থানীয়রা। এছাড়াও অভিযোগের অনুলিপি দিয়েছে পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মেট্রোপলিটন মাহিগঞ্জ থানা ও কল্যাণী ইউনিয়নের প্রশাসক বরাবর।
অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, প্রায় ৪ বছর পূর্বে বিলকিস স্বামী পরিচয়ে ১ ব্যক্তিকে তার গৃহে থাকতে দেয়। উক্ত ব্যক্তি নিজেকে ডিআইজি পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জনকে চাকুরী দেবার নাম করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিত। পরে হঠাৎ একদিন মাহিগঞ্জ থানা পুলিশের একটি অভিযানিক দল এসে তাকে গ্রেফতার করে, পরে পুলিশের মাধ্যমে স্থানীয়রা জানতে পারে উক্ত ব্যক্তি ভূয়া ডিআইজি! একজন প্রতারক ও মাদক কারবারি। অভিযোগ সুত্রে আরও জানাযায়, সন্ধ্যা হলেই বিলকিসের বাড়ির আশপাশে অচেনা পুরুষের আনাগোনা বাড়তে থাকে অনেক নামীদামি ব্রান্ডের মোটরসাইকেল ও কারে আসতে দেখা গেছে অনেককেই।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে গেলে অভিযুক্ত বিলকিসের পিতা মো: বদরুজ্জামান (৭৫) বলেন, আমার মেয়ে আগে ঢাকায় ছিল, ঢাকা থেকে আসার পর আত্মীয় স্বজনরা মিলে কেউ বাঁশ, টিন, শ্রমিকের মজুরী দিয়ে তাকে গ্রামে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। প্রতিবেশীদের সহযোগিতা নির্মিত ঘরে বসবাস শুরুর ক'মাস না যেতেই, তার বাসায় বহিরাগত লোকজন আসা যাওয়া শুরু হয়। এতে গ্রামবাসীরা আমাকেসহ আমার ছেলেদের অভিযোগ দিলে, আমি গিয়ে নিষেধ করার কারণে আমার মেয়ে ও নাতনী আমাকে মারপিট করে হাত ভেঙ্গে দেয় এবং ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এতে আমি কোমরে প্রচন্ড আঘাতপ্রাপ্ত হই।দীর্ঘদিন চিকিৎসার পরেও এখন পর্যন্ত আর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারিনি। ইদানীং আমাকেসহ আমার ছেলেদের নামে বাড়ি পোড়ানোর মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমার মেয়ে কার পরামর্শে একেরপর এক মিথ্যা মামলা দিচ্ছে আপনারা একটু খুঁজে বের করেন।
প্রতিবেশী লাভলী বেগম বলেন, সে নারী নামে কলঙ্ক! বিলকিসের অনৈতিক কাজে বাধা দেয়ার কারণে সে তার বৃদ্ধ বাবার হাত ভেঙ্গে দিছে, এছাড়াও বাপ ভাইয়ের নামে কয়েকটা মামলা করেছে।
হর্তকির তলের স্থানীয় বাসিন্দা, শ্রী স্বপন চন্দ্র, সুশান্ত চন্দ্র (সুজিত), মো: তারিফ মিয়া (১৭) বলেন, আমাদের তিনজনকে স্বাক্ষী করে বিলকিস তার বাপ ভাইয়ের নামে গত ২৪/০৩/২০২৫ ইং রংপুর মেট্রোপলিটন মাহিগঞ্জ থানায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন, যাহার মামলা নং-০৬। আমরা উক্ত ঘটনার সমন্ধে কিছুই জানতাম না। পরে সেই মামলা আদালতে এভিডেভিড করে দিয়েছি। শুনেছি বিলকিস আবারও তার ভাই ভাবী ভাতিজাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিলকিস বেগম বলেন, আমার নামে পতিতাবৃত্তি ও মাদকের অভিযোগ যারা দিয়েছে, তারা অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে আমি অভিযোগ পত্রে গণস্বাক্ষরকারী সকলের নামে মানহানীর মামলা করবো। কত লাখ টাকা যায় যাবে তবুও আমি কাউকে ছাড় দিবোনা, তার দায়েরকৃত মামলার স্বাক্ষীদের এভিডেভিড করার বিষয় বিলকিস বেগম বলেন, ভয় দেখানোসহ আসামিরা স্বাক্ষীকে টাকা খাওয়ায় এভিডেভিড করে নিয়েছে। স্বাক্ষীরা আমাকে বলছে যে টাকা বেশী দিবে আমরা স্বাক্ষী তার পক্ষে দিবো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মনির হোসেন বলেন, আমরা কয়েকজন মেম্বার ও স্থানীয় মান্যগণ্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে বিলকিসের বিষয় আপোষ মিমাংসা করে দিয়েছি। কিন্তু বিলকিসের অবস্থা হলো বিচার মানি তালগাছ আমার। বর্তমানে বিলকিস একাধিক মামলা তার কারণে গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, সিরাজুল ইসলাম নামের একটি অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তদন্ত করেই ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আব্দুল মজিদ।