র,প,ই প্রতিনিধি: শরিফ মন্ডল
বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিকস ডিপার্টমেন্টে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে একটি অত্যাধুনিক বুদ্ধিমান রোবট— PuppyPi। এটি একটি চতুষ্পদ বা চার পায়ে চলাচলকারী রোবট, যা আধুনিক প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শেখার নতুন সুযোগ তৈরি করেছে।
PuppyPi রোবটটি Raspberry Pi 4B বা 5 দিয়ে চালিত এবং Robot Operating System (ROS) ভিত্তিক। এতে রয়েছে ৮টি শক্তিশালী সার্ভো মোটর, যা রোবটটির গতি ও গতিশীলতা নিয়ন্ত্রণ করে। IMU সেন্সর যুক্ত থাকায় রোবটটি নিজেই তার ভারসাম্য বজায় রাখতে সক্ষম।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় সমৃদ্ধ AI ভিশন
রোবটটির অন্যতম আকর্ষণ উচ্চ রেজোলিউশনের ওয়াইড-অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা, যার মাধ্যমে এটি ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করতে পারে। OpenCV লাইব্রেরির মাধ্যমে PuppyPi বিভিন্ন জটিল কাজ সম্পন্ন করতে পারে—যেমন: টার্গেট শনাক্তকরণ, লাইন ফলো করা, বাধা এড়িয়ে চলা, মুখ বা রঙ চেনা, এমনকি নির্দিষ্ট ট্যাগ শনাক্ত করাও সম্ভব।
নিয়ন্ত্রণে সহজতা ও সরাসরি ভিডিও দেখা
PuppyPi রোবটটি WonderPi অ্যাপ, কম্পিউটার কিংবা PS2 কন্ট্রোলার দিয়ে সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এর Pro ভার্সনে রয়েছে লাইভ ভিডিও স্ট্রিমিং সুবিধা—যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী যেন রোবটের চোখ দিয়েই চারপাশ দেখতে পারে।
চলাফেরার কৌশল ও কোড বিশ্লেষণ
রোবটটির হাঁটার ধরন নির্ধারণ করা যায়—ripple এবং trot নামে দুই ধরনের গেইট প্ল্যানিং যুক্ত আছে এতে। শিক্ষার্থীরা চাইলেই পায়ের মুভমেন্ট, সময় ও উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। Pro ভার্সনে রয়েছে প্রতিটি ফাংশনের বিশ্লেষণ ও কোড, যা শিক্ষার্থীদের রোবটিক্স শেখায় বাড়তি সুবিধা দেবে।
Lidar ও রোবটিক হাত: বাস্তবমুখী কাজের নতুন মাত্রা
PuppyPi Pro-তে TOF Lidar সেন্সর ও রোবটিক হাত সংযুক্ত করার সুবিধা রয়েছে। এতে করে রোবটটি SLAM প্রযুক্তির মাধ্যমে নিজে নিজে রাস্তা নির্ধারণ করতে পারে, চলমান বাধা শনাক্ত করে এড়িয়ে চলতে পারে এবং ছোট ছোট বস্তু তুলে স্থানান্তরও করতে পারে।
প্রযুক্তির ছোঁয়ায় শিক্ষায় উদ্ভাবনের দ্বার খুলছে
ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষক বলেন, “PuppyPi রোবট শিক্ষার্থীদের বাস্তবভিত্তিক সমস্যা সমাধানে দক্ষ করে তুলবে। এটি শুধু একটি যন্ত্র নয়, বরং এক নতুন যুগের সূচনা।”
বরিশাল পলিটেকনিকে PuppyPi যুক্ত হওয়ায় প্রযুক্তিগত শিক্ষায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। শিক্ষার্থীরা এখন হাতে-কলমে রোবোটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন ভিশন প্রযুক্তি শেখার বিরল সুযোগ পাচ্ছে—যা ভবিষ্যতের প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বে তাদের জন্য একটি শক্ত ভিত তৈরি করবে।