নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিমলা, নীলফামারী:
ডিমলা উপজেলার ১নং পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নে বিএনপির আয়োজিত একটি মিছিল এখন জেলার রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। কারণ, সেই মিছিলেই শোনা গেছে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী ও প্রতীকী স্লোগান: “আমরা সবাই মুজিব সেনা, ভয় করি না বুলেট-বোমা।”
তুহিন সাহেবের মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত এই মিছিলে বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের স্লোগান দিতে থাকায় এলাকার সাধারণ জনগণ চরম বিভ্রান্তিতে পড়ে যায়। প্রশ্ন উঠেছে—এটা কী সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলার নমুনা, না কি উদ্দেশ্যমূলক নাটক?
বিএনপি কি আদর্শ বিচ্যুতির পথে?
বিএনপি বারবার দাবি করে আসছে, তারা একটি সুসংগঠিত ও আদর্শিক রাজনৈতিক দল। কিন্তু আজকের ঘটনার পর সেই দাবি নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
যে দল দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে রাজনীতি করছে, সেই দলের মিছিলেই যদি আওয়ামী লীগের স্লোগান উচ্চারিত হয়—তাহলে সেটা কাকে নির্দেশ করে?
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি বিএনপির রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ও আদর্শহীনতার বড় উদাহরণ। তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। এমনকি মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরাও জানেন না, তারা কোন আদর্শের প্রতিনিধিত্ব করে।
এই ঘটনাটি বিএনপির নেতৃত্বের দুর্বলতা ও স্থানীয় সাংগঠনিক দুর্বলতাকেও সামনে এনেছে।
দলের ভেতরে আদর্শচ্যুতি, দিকনির্দেশনার অভাব ও সাময়িক জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য প্রতিপক্ষের আদর্শ ব্যবহার করার প্রবণতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এমন ঘটনা শুধু দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে না, বরং সাধারণ মানুষের আস্থা থেকেও তাদের আরও দূরে সরিয়ে দেয়। জনগণ কীভাবে বিশ্বাস করবে, যে একটি দল নিজস্ব স্লোগান ধরে রাখতে পারে না, তারা দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব দিতে পারবে?
এলাকাবাসীর মধ্যে এ ঘটনায় দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছেন, এটা ছিল মিছিলের পরিকল্পনায় দুর্বলতা। আবার কেউ সন্দেহ করছেন, এটি পরিকল্পিত কৌশল—যাতে বিএনপি কিছুটা সুবিধা নিতে চায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই বলছেন, “যারা মুজিব সেনা হতে চায়, তারা কেন বিএনপির ব্যানারে হাঁটে?”
একটি রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে বড় শক্তি তার আদর্শ ও ঐক্য। কিন্তু আজকের এই ঘটনায় স্পষ্ট হয়েছে—বিএনপির ভেতরে সেই আদর্শিক দৃঢ়তা ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলার অভাব রয়েছে।
এভাবে চলতে থাকলে তারা হয়তো সাময়িক আলোচনায় আসবে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে হারাবে জনগণের আস্থা এবং রাজনৈতিক মাটির নিচের ভিত্তি
Leave a Reply