ডিমলায় বিএনপির হেভিওয়েট নেতাকে ফুল দিয়ে বরণ করলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান!
হুসাইন আল হিমেল,জেলা প্রতিনিধি:নীলফামারী
নীলফামারী-১ আসনের বিএনপির অন্যতম হেভিওয়েট প্রতিনিধি শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন দেশে ফেরার পর ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়নে ঘটে গেল এক অবাক করা দৃশ্য। আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান মুন চৌধুরী, যার বিরুদ্ধে অতীতে দুর্নীতি, নারী লোভ এবং নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে, তিনি নিজ হাতে পুষ্পস্তবক দিয়ে বিএনপি নেতাকে বরণ করে নেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধারণ জনগণ, বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মী এবং দলীয় আদর্শে বিশ্বাসী বিপ্লবীরা বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, বিএনপির মত একটি ঐতিহ্যবাহী দল কি আজ আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনর্বাসনের প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে?
উল্লেখ্য, এর আগেও নীলফামারী জেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপির কমিটিতে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ এবং সুবিধাবাদী ব্যক্তিদের জায়গা করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তৃণমূল নেতাকর্মীরা বারবার সতর্ক করলেও সেগুলো উপেক্ষিত হয়।
এতে করে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে—
বিএনপির নেতৃত্ব আজ কোন পথে হাঁটছে?
আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য যারা রক্ত দিয়েছেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন, তাদের ত্যাগ কি তাহলে অপমানিত হবে?
দেশ কি আবার দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা আর চাটুকারিতার অন্ধকারে তলিয়ে যাবে?
জনগণ কি আবার দুর্নীতিবাজদের হাতে জিম্মি হবে?
বিশ্লেষকরা বলছেন, যারা রাজনীতিকে ব্যবসার হাতিয়ার বানিয়েছে, যারা লোভ-লালসার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে, তাদের দলে স্থান দিলে আন্দোলনের মূল শক্তি ভেঙে পড়বে। বিএনপি যদি নিজের আদর্শিক পরিচয় বজায় রাখতে চায়, তাহলে দলীয় শুদ্ধি অভিযান চালানো এখন সময়ের দাবি।
ডিমলার সাধারণ মানুষও এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন—
"আমরা জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে আন্দোলন করেছি। আজ দেখি, যারা আমাদের রক্তে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তারাই আবার নেতা সাজছে! এটা সহ্য করা হবে না।"
স্থানীয় পর্যায়ে ইতিমধ্যেই আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। তৃণমূল নেতাকর্মীরা স্লোগান তুলছেন—
"বিশ্বাসঘাতকদের বর্জন করো, দলের পবিত্রতা রক্ষা করো!"
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে জবাবদিহি চাওয়া হচ্ছে—
কীভাবে আওয়ামী লীগ মনোনীত দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের পুষ্প অর্পণ করার মতো অপমানজনক কাজ সহ্য করা হয়?
কীভাবে বারবার দলে সুবিধাবাদীদের স্থান দেওয়া হয়?
দেশের ক্রান্তিকালে, যখন জনগণ পরিবর্তনের জন্য আশায় তাকিয়ে আছে, তখন বিএনপির ভেতরের এই আত্মঘাতী ভুল কি শেষ পর্যন্ত দলটিকে আরও পিছিয়ে দেবে?
বিএনপির আদর্শের প্রতি বিশ্বাসী তৃণমূল বিপ্লবীরা এখন জেগে উঠেছে।
তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে—
"পুনর্বাসন নয়, বিপ্লব চাই!"