পবিপ্রবি প্রতিনিধি
২৮ এপ্রিল (সোমবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর এ স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে৷ স্মারক লিপিতে প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর রয়েছে। এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পবিপ্রবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম রাতুল ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা জনিসহ ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী।
রেজিস্টার বরাবর প্রদানকৃত উক্ত স্মারকলিপিতে বলা হয় ‘বর্তমানে স্মারক নং- পবিপ্রবি/প্রশা-১৩৭/ব-৩৪ (অংশ-২)/১১/১৮০৬ অনুযায়ী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি সাময়িকভাবে স্থগিত করে রাখা রয়েছে। এটি বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৬, ৩৭, ৩৮ ও ৩৯ ধারার পরিপন্থী। সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দেশের সকল নাগরিক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গঠনের অধিকার রাখেন। এছাড়াও, রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ পূর্ববর্তী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিস্ট শাসনের পথ প্রশস্ত করে। আমরা আশাবাদী, ফ্যাসিস্টমুক্ত দেশে এই নিষেধাজ্ঞা রেখে নতুন কোনো ফ্যাসিস্ট কাঠামো প্রতিষ্ঠায় বর্তমান প্রশাসন সুযোগ দেবে না। আমরা আরও বিশ্বাস করি, নতুন বাংলাদেশে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের নামে রাজনীতির আড়ালে ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসবাদ পুনরায় কায়েম হবে না। যদি কেউ রাজনীতির নামে সন্ত্রাসের পথ বেছে নেয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রাজনীতি ছাত্রছাত্রীদের সাংবিধানিক অধিকার। রাজনৈতিক সচেতনতার মাধ্যমেই দেশ যেকোনো সংকট থেকে মুক্তি পেয়েছে। ৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১-এর মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম, এমনকি ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবও রাজনৈতিক চেতনারই ফসল। আর এই চেতনার বীজ অঙ্কুরিত হয় ছাত্রজীবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির মধ্য দিয়ে।’
এসময় পবিপ্রবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা জনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের ওপর আরোপিত সাময়িক রাজনীতি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য আমরা আজ মাননীয় উপাচার্য স্যারের নিকট একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছি। শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংবিধান স্বীকৃত। অংশগ্রহণমূলক এবং সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রেখে শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা সময়ের দাবি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা একজন শিক্ষার্থীকে চিন্তাশীল, দায়িত্বশীল ও গণতান্ত্রিক মানসিকতা সম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে। শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক চর্চার অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং শিক্ষা-সহায়ক পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসন আমাদের যুক্তিসঙ্গত দাবির মেনে নিবেন।”
ছাত্রদলের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম রাতুল বলেন, ” ফ্যাসিস্টদের পুনর্বহাল ও একটি গুপ্ত সংগঠনকে রাজনৈতিক সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে পুর্নবাসন উদ্দেশ্য এই রাজনৈতিক স্থগিতের সিদ্ধান্ত। এই রাজনীতি স্থগিতের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যরা স্মারক লিপি জমা দেয়। ফ্যাসিস্টদের দোসরা রাজনীতি নিষিদ্ধের ফায়দা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে সভা করে বেড়াচ্ছে। আমাদের এই প্রশাসন ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে কোন দৃশ্যমান ব্যাবস্থা নেননি৷ এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ছাত্ররাজনীতি সাময়িক স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার দাবি জানাই। শিক্ষার্থীদের রাজনীতি করার অধিকার ফিরিয়ে দিতেই হবে।”
Leave a Reply