হুসাইন আল হিমেল,উপজেলা প্রতিনিধি
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় জাতীয় মহিলা সংস্থার অধীনে পরিচালিত নারী প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে ভয়াবহ দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ আদায়ের মাধ্যমে নাম তালিকাভুক্ত করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘুষের অঙ্ক ছিলো জনপ্রতি ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এতে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রশিক্ষক কর্মকর্তা মোছা: স্বপ্না আক্তারের বিরুদ্ধে। ঘটনার তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় তাকে জরুরি ভিত্তিতে বদলি করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাসেল মিয়া জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি তদন্ত করেন। তদন্তে দেখা যায়, প্রশিক্ষণের জন্য নির্ধারিত ২৫০ জনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়ে ৫৭২টি। অভিযোগ রয়েছে, প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নেওয়া হলেও অনেকে তালিকায় নাম পাননি। বরং অযোগ্য ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান ব্যক্তিরাও ঘুষের বিনিময়ে তালিকায় স্থান পেয়েছেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য নির্ধারিত ভাতা থেকে শুরু করে অংশগ্রহণ প্রক্রিয়া পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে অর্থ লেনদেন ও অনিয়ম ছিলো স্পষ্ট। পূর্বে নিয়োজিত এক প্রশিক্ষক বাবুল চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধেও প্রশিক্ষণ ভাতা বাবদ প্রায় ৬৮ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে, যিনি দায়িত্ব শেষে পালিয়ে যান।
ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটিত হলে প্রশিক্ষক কর্মকর্তা মোছা: স্বপ্না আক্তারকে বদলি করে অন্যত্র পাঠানো হয়। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। ইউএনও বলেন, “সরকারি কোনো প্রকল্পে দুর্নীতির সুযোগ নেই। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।”
অন্যদিকে ভুক্তভোগী অনেকেই জানিয়েছেন, টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে গালিগালাজ, হুমকি-ধমকিসহ নানা মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। কেউ কেউ থানায় মৌখিকভাবে অভিযোগও জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই দুর্নীতির ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত শেষে অপরাধ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।