নিউজ ডেস্ক :
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) আবাসিক হলসহ বিভিন্ন ভবনের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি ভবন ও স্থাপনা আগের নামে ফিরিয়ে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে ভবনগুলো থেকে খুলনার কৃতি সন্তান বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পিসি রায়), লালন সাঁই, কবি জীবননান্দ দাশসহ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নাম বাদ পড়েছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হয়। এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ২৩০তম সভায় নামকরণের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়।
শেখ পরিবারের নামের পাশাপাশি কবি, শিল্পী, বিজ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবীদের নাম পরিবর্তনের সমালোচনা করেছেন অনেকে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী কয়েকটি ভবনের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। বাকিগুলো আগে যে নামে পরিচিত ছিল, সেই নামেই ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
যেসব আবাসিক হলসহ বিভিন্ন ভবনের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন হল, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম বিজয় ২৪ হল, সত্যেন্দ্র নাথ বসু একাডেমিক ভবনের নাম একাডেমিক ভবন ১, জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের নাম একাডেমিক ভবন ২, কবি জীবনানন্দ দাস একাডেমিক ভবনের নাম একাডেমিক ভবনের নাম ৩, জয় বাংলা ভবনের নাম একাডেমিক ভবন ৪, শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ প্রশাসনিক ভবনের নাম প্রশাসনিক, শহঈদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরী চিকিৎসা কেন্দ্রের নাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার, সুলতানা কামাল জিমনেসিয়ামের নাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় জিমনেসিয়াম, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের নাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গবেষণাগার করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষকদের তিনটি কোয়ার্টারের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
জানা যায়, গত বছর গণঅভ্যুত্থানে খুলনার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অভ্যুত্থানের পর ২৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার ও শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে ৩৭ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ক্যাম্পাসের সব স্থাপনা থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নাম পরিবর্তন।
তবে ওই দিন দাবি উত্থাপনকারীদের শিক্ষার্থী আয়মান আহাদ বলেন, আমরা ফ্যাসিজম রেজিমের সবার নাম পরিবর্তন চেয়েছি। বিশেষ করে শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধে খুলনায় নিহত বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের নামে নামকরণের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবীদের নামে করা স্থাপনার বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য ছিল না।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বসবাসের কোয়াটারের নাম শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নামে, এটা মানানসই নয়। অন্যান্যদের নামও স্থাপনার সঙ্গে যাচ্ছিল না, এজন্য বেশিরভাগই আমরা আগের নামে ফিরে গেছি। পিসি রায়ের নামে একটি কলেজসহ বহু একক স্থাপনা রয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা খুলনা অঞ্চলের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে স্থাপনার নামকরণ করব। মেয়েদের হলের নামও পরিবর্তন হবে।
Leave a Reply