নিউজ ডেস্ক :
গৌরব ও সাফল্যের ৩৪টি ফাগুন পেরিয়ে ৩৫তম জন্মদিনে পা রাখল প্রযুক্তি ও গবেষণায় সেরা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। স্বাধীনতা-পরবর্তী উচ্চশিক্ষার স্বপ্নদ্রষ্টা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুটি পাতার একটি কুঁড়ির পুণ্যভূমিতে ৩২০ একর জায়গা নিয়ে ১৯৯১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনটি বিভাগে ১৩ জন শিক্ষক ও ২০৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়।
উদ্ভাবন, গবেষণা ও বৈশ্বিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন, প্রযুক্তির ব্যবহার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর মুক্ত সংস্কৃতির বাঁধনে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পরিচিতি লাভ করেছে দেশের অন্যতম সেরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি তার ইতিহাস ঐতিহ্যকে লালন করে আসছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৭টি অনুষদের অধীনে ২৮টি ডিপার্টমেন্ট, ২টি ইনস্টিটিউশন, ৪টি অনুমোদিত (অ্যাফিলিয়েটেড) মেডিকেল কলেজ এবং ১টি অনুমোদিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রয়েছে। আজ তিন দশকের বেশি সময়ে পাঁচ শতাধিক শিক্ষক ও ১২ হাজারের বেশি ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে এক মহিরুহে পরিণত হয়েছে শাহজালালের পুণ্যভূমি সিলেটের এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে দেশের মানুষের যেমন রয়েছে প্রত্যাশা, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরও রয়েছে নানা ভাবনা ও প্রত্যাশা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষকের এ রকম প্রত্যাশা ও ভাবনা তুলে ধরা হলো─
শাবিপ্রবির সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী ওয়াক্কাস বলেন, আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫তম জন্মদিন। সময়ের পরিক্রমায় এ অঙ্গন ভরা যৌবনা। শাবিপ্রবি ছিল সিলেটবাসীর অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন। এ জনপদের নাগরিকদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও বর্তমানে শিক্ষক হিসেবে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির হিসাব-নিকাশে যোজন যোজন ফারাক দেখতে পাই। মাস্টার প্ল্যানের গায়ে পেরেক কাঙ্ক্ষিত অবকাঠামোর অগ্রগতি না হওয়া এবং বিগত দিনে রাষ্ট্রযন্ত্রের বিমাতাসুলভ আচরণ গুচ্ছে অন্তর্ভুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্বতা ও স্বকীয়তার পালকে ক্ষত তৈরি করেছিল। যদিও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও খ্যাতির দ্যোতি ছড়াচ্ছে। পাশাপাশি রাষ্ট্র সংস্কার ও দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটরা সরকারি-বেসরকারি এবং উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করার মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও গৌরব দিন দিন বাড়তির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আক্ষেপের জায়গাটুকু হলো, প্রথম বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও এখনো উপাচার্য অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা লাগে। অথচ এ নিকেতনের পণ্ডিতরা অধ্যাপনা ও গবেষণায় দেশ বিদেশে খ্যাতির রোশনাই বিলাচ্ছে। এত দিনেও সিনেট তৈরি না হওয়া পীড়া দেয় এবং বৈষম্যহীন বাংলায় শিক্ষার্থীরা শাকসুর দেখা পাচ্ছে না, যা ভাবতে কষ্ট লাগে। আশা ও বিশ্বাস বর্তমান কর্তৃপক্ষ মাস্টার প্ল্যানের কাটাছেঁড়া বন্ধ করে পরিবেশবান্ধব গুণগত শিক্ষার্থী সৃজন এবং সহসা সিনেট গঠনে মনোযোগী হবেন এবং গণতন্ত্র চর্চার আঁতুড়ঘর হিসেবে সজীব করবেন। ইতোমধ্যে নিজস্ব ধাঁচে ভর্তি পরীক্ষার ঐতিহ্যের রীতিতে প্রত্যাবর্তন আমাদের কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছাতে আশান্বিত করছে। এ শুভলগ্নে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী-শিক্ষক এবং শুভাকাঙ্ক্ষীসহ সবার সুন্দর আগামী প্রত্যাশা করছি।
Leave a Reply