ইবি প্রতিনিধি:
২৪তম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনীতে সেরা দশ শিল্পীর তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) চারুকলা বিভাগের প্রভাষক ইমতিয়াজ ইসলাম। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে আয়োজিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ সম্মাননা গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পী অধ্যাপক আবদুস সাত্তার। এছাড়া বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হকসহ আরও অনেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক আবদুল হালিম। এসময় অতিথিরা পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীদের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও অর্থমূল্যের চেক তুলে দেন।
পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রভাষক ইমতিয়াজ ইসলাম বলেন, “এ ধরনের প্রাপ্তি ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা জোগায়। তবে আমি কখনো পুরস্কারের কথা মাথায় রেখে ছবি আঁকি না—শিল্পচর্চা আমার কাছে উপভোগের বিষয়।” তিনি জানান, ভ্রমণের সময় জমানো টিকিট ও অভিজ্ঞতার আলোকে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন, আচার-আচরণ এবং সমসাময়িক ঘটনাকে জলরং মাধ্যমে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন। মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সহজ দৃশ্যভাষায় সম্পর্ক তৈরি করাই ছিল তাঁর কাজের মূল উদ্দেশ্য।
এসময় তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের শিল্পচর্চা অব্যাহত রাখবে।
উল্লেখ্য, ইমতিয়াজ ইসলাম এর আগেও ২৪তম জাতীয় শিল্পপ্রদর্শনী পুরস্কার, সেভেরিয়ান এশিয়ান আর্ট প্রাইজ, বার্জার তরুণ শিল্পী পুরস্কারসহ দেশে-বিদেশে একাধিক গ্র্যান্ট ও পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
বুধবার থেকে শুরু হওয়া এবারের প্রদর্শনী চলবে আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। জাতীয় চিত্রশালার ২ থেকে ৭ নম্বর—মোট ছয়টি গ্যালারিতে বিপুলসংখ্যক শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে। চিত্রকলা, ভাস্কর্য, প্রাচ্যকলা, কারুশিল্প, মৃৎশিল্প, আলোকচিত্র, স্থাপনা শিল্প, পারফরম্যান্স আর্ট ও নিউ মিডিয়া আর্টসহ নানা মাধ্যমে সৃষ্ট শিল্পকর্ম এতে স্থান পেয়েছে। প্রদর্শনীটি প্রতি কর্মদিবসে সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা এবং ছুটির দিনে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
প্রসঙ্গত, নবীন চারুকলা প্রদর্শনীর সূচনা হয় ১৯৭৫ সালে। এবারের আয়োজনে সারা দেশের ২১ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৬৮১ জন শিল্পী ১ হাজার ৩৯৩টি শিল্পকর্ম জমা দেন। প্রাথমিক বাছাই শেষে ১৯১ জন শিল্পীর নির্বাচিত ২১৫টি শিল্পকর্ম চূড়ান্ত প্রদর্শনীতে স্থান পায়।